বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। নিজস্ব চিত্র।
আবারও তৃণমূলকে বিঁধলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর উদ্দেশে রাজ্যের মন্ত্রীর করা কুরুচিকর মন্তব্য নিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করলেন তিনি।
সোমবার পুরুলিয়া শহরে বিজেপির নীতি যাত্রা শেষে একটি সভায় যোগ দিতে এসেছিলেন তিনি। সেই সভা থেকে সুকান্ত বলেন, “নিজেদের আদিবাসী দরদী হিসেবে পরিচয় দেওয়া তৃণমূল আদিবাসী রাষ্ট্রপতিকে সমর্থন করেনি, উলটে আদিবাসীদের সঙ্গে নৃত্য করার সময় মুখ্যমন্ত্রী হাতে গ্লাভস পরে নিয়েছিলেন। এমনকি, যিনি রাষ্ট্রপতিকে অসম্মানজনক কথা বলে ছিলেন তিনি এখনও বহাল তবিয়তে রয়েছেন তৃণমূলের মন্ত্রী সভায়।” এর পরেই তিনি বলেন, “এটা যদি বিজেপির কোনও মন্ত্রী হতেন, তা হলে আমরা কান ধরে বার করে দিতাম দল থেকে। লাথি মেরে তাড়িয়ে দিতাম মন্ত্রিসভা থেকে।”
পঞ্চায়েত নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ নামে প্রকল্প শুরু করেছে তৃণমূল। এই প্রকল্পে নির্বাচিত তৃণমূল নেতারা গ্রামে গ্রামে গিয়ে এলাকাবাসীদের সঙ্গে জনসংযোগ তৈরি করবেন। যারা এই প্রকল্পে দলের হয়ে কাজ করবেন তাঁদের দিদির দূত বলা হচ্ছে। এই দূতেরা ইতিমধ্যেই নানা জায়গায় বিক্ষোভের মুখোমুখি হয়েছেন। সেই দিদির দূতদের থেকে গ্রামবাসীদের সতর্ক থাকতে বলেছেন সুকান্ত। তিনি বলেন, “দেখবেন গ্রামে গিয়ে আপনার গরুটা, ছাগলটা যেন না চুরি করে নিয়ে যায় দূতেরা।” একই সঙ্গে পুলিশকেও কটাক্ষ করেছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি। তিনি বলেন “পুলিশ আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে যদি তৃণমূলের হয়ে কাজ করে তা হলে তাঁরা যেন টুপি থেকে অশোকস্তম্ভ খুলে ফেলেন এবং হওয়াই চটি লাগিয়ে নেন।”
পুরুলিয়ার মঞ্চ থেকে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা শান্তিরাম মাহাতো ও বিধায়ক সুশান্ত মাহাতোকে নাম ধরে আক্রমণ করলেন সুকান্ত। মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডুকে কটাক্ষ করে সুকান্ত বলেন, “এই জন্য সন্ধ্যারানি রাষ্ট্রপতিকে অসম্মানজনক কথা বলার সময় চুপ ছিলেন। কারণ, তার পরিবারের লোকজনকে তিনি চাকরি করে দিয়েছেন। তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কর্মীদের পরিবারের সদস্যদের চাকরি হলে সেটা কোনও অবাক হওয়ার মতো কিছু নয়। যখন এদের বাড়ির কুকুর, বিড়াল, হাঁস, মুরগি চাকরি পাবে তখন অবাক হওয়ার বিষয় থাকবে।”
গত নভেম্বরে নন্দীগ্রামে তৃণমূলের এক সভায় রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা স্থানীয় বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণ করতে গিয়ে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্যের অভিযোগ ওঠে মন্ত্রী অখিল গিরির বিরুদ্ধে। নন্দীগ্রামে অখিলের ওই সভার একটি ভিডিয়ো ফুটেজ প্রকাশ্যে আসে। সেখানে অখিলকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমরা রূপের বিচার করি না। তোমার রাষ্ট্রপতির চেয়ারকে আমরা সম্মান করি। তোমার রাষ্ট্রপতিকে কেমন দেখতে বাবা?’’ তার পরেই বিতর্ক চরমে ওঠে।