ঝুঁকি: দালানডাঙা গ্রামের কাছে, বিষ্ণুপুর-সাবড়াকোন রাস্তায়। রবিবার ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ। ছবি: শুভ্র মিত্র
জঙ্গল থেকে বিষ্ণুপুর শহরের কাছাকাছি চলে এল একটি দলছুট দাঁতাল। সেই হাতিকে দেখতে জনতার ভিড় সামলাতে নাজেহাল হন বনকর্মী ও পুলিশ। এরই মধ্যে হাতির পায়ের আঘাতে আহত হন এক মহিলা। একটি অ্যাম্বুল্যান্সও ওই হাতিটি ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ।
ডিএফও (পাঞ্চেৎ) সত্যজিৎ রায় বলেন, “একটি দাঁতাল বাঁকুড়া ডিভিশনের সোনামুখী থেকে ঢুকে পড়ে রামসাগরে। হাতির সামনে পড়ে এক মহিলা আহত হয়েছেন। সরকারি নিয়মে তাঁকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।”
বন দফতর সূত্রের খবর, দলছুট একটি দাঁতাল রবিবার ভোরে সোনামুখী থেকে ওন্দার রামসাগর হয়ে রেললাইন ধরে বিষ্ণুপুরে হাজির হয়। খবর পেয়ে বন দফতরের কর্মীরা শহরের ভিতরে ঢোকার রাস্তা আটকানোর চেষ্টা করেন। পরে হাতিটিকে বিষ্ণুপুর রেঞ্জ অফিসের কাঠের ডিপোর পাশ দিয়ে কাঁটাবাড়ি হয়ে কড়রার জঙ্গল বরাবর বাঁকাদহ জঙ্গলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এলাকায় হাতি আসার খবর পেয়ে লোকজন ভিড় করেন। তাতে হাতির মেজাজও কিছুটা বিগড়ে যায় বলে বন কর্মীদের দাবি। সেই সময়ে এ দিন সকাল সাড়ে ছ’টা নাগাদ দালালডাঙা গ্রামের বাসিন্দা ২৫ বছরের জয়ন্তী রায় হাতির সামনে পড়ে যান। পা দিয়ে হাতিটি তাঁকে ছুঁড়ে দিলে ছিটকে পড়েন ওই বধূ। স্থানীয়েরা আহত মহিলাকে বিষ্ণুপুর হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসক জানান, মহিলার কোমরে আঘাত লেগেছে। ওই বধূর বাবা নাড়ু রায় বলেন, ‘‘হাতিটি হঠাৎ গ্রামে ঢুকে পড়ায় সবাই ওর পিছনে ছুটতে থাকে। আমার মেয়ে তার মেয়েকে খুঁজতে বেরিয়ে হাতির সামনে পড়ে যায়। সেই সময়ে পা দিয়ে হাতিটি তাকে ছুড়ে ফেলে। ভাগ্যের জোরে প্রাণে বেঁচেছে।
এখানেই শেষ নয়। দালালডাঙা গ্রামের চুনারাম কিস্কু সেই সময় মাতৃযানের অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে বিষ্ণুপুর হাসপাতালে যাচ্ছিলেন। স্থানীয়দের দাবি, গ্রামের সামনে দাঁতাল পথ আটকে থাকায় চালক খালি অ্যাম্বুল্যান্স ফেলে ছুটে পালান। হাতিটি দাঁত দিয়ে অ্যাম্বুল্যান্সের দরজা এফোঁড় ওফোঁড় করে দেয়। মানুষের চিৎকারে হাতিটি পালিয়ে যায় জঙ্গলে।
ডিএফও বলেন, ‘‘শহরে যাতে হাতিটি ঢুকতে না পারে, সে দিকে নজর ছিল বনকর্মীদের। অনেক চেষ্টা করে হাতিটিকে বাঁকাদহ রেঞ্জে পাঠানো হয়েছে। আমঢহরায় আর একটি দলছুট হাতি ছিল। আমাদের ধারণা এই দলছুট হাতিগুলি পশ্চিম মেদিনীপুর চলে যাবে।’’