নির্বাচন কমিশন। —ফাইল চিত্র।
ভুয়ো ভোটারের অভিযোগ খতিয়ে দেখে প্রশাসনকে কার্যত ক্লিনচিট দিয়ে গেল নির্বাচন কমিশন। শনিবার দুই সদস্যের এক প্রতিনিধি দল সোনামুখী, ইন্দাস, কোতুলপুর ও বিষ্ণুপুর ব্লকের একাধিক এলাকায় ঘুরে অভিযোগ খতিয়ে দেখেন। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, এলাকায় ঘুরে ভুয়ো ভোটারের অভিযোগের কোনও সত্যতা খুঁজে না পেয়ে বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনকে কার্যত ক্লিনচিট দিয়ে যান নির্বাচন কমিশনের ওই প্রতিনিধি দল।
বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ আগেই নির্বাচন কমিশনে নিজের নির্বাচনী কেন্দ্রে বিপুল সংখ্যক ভুয়ো ভোটারের অস্তিত্ব নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তাঁর মূল অভিযোগ ছিল, শুধুমাত্র বিষ্ণুপুর মহকুমা এলাকাতেই এমন ৩৭ হাজার ৫৫৭ জন ভুয়ো ভোটার রয়েছেন, যাঁদের দু’জায়গায় নাম রয়েছে। এই অভিযোগ পাওয়ার পরেই নড়েচড়ে বসে নির্বাচন কমিশন। তড়িঘড়ি শনিবার বিষ্ণুপুরে দুই সদস্যের এক প্রতিনিধি দল পাঠানো হয়। নির্বাচন কমিশনের ওই প্রতিনিধি দল সোনামুখী ব্লকের ধানসিমলা, রপটগঞ্জ, রামপুর, কোতুলপুরের মির্জাপুর ও ঘোষপাড়া, ইন্দাস ব্লকের ডান্না ও বিষ্ণুপুরের চৌকান বুথে যান। অভিযোগে যে সমস্ত ভোটারের দু’জায়গায় নাম রয়েছে বলে অভিযোগ তোলা হয়েছিল, সেই সমস্ত ভোটারদের বাড়িতে যান আধিকারিকেরা। কথা বলেন তাঁদের পরিবারের সঙ্গে। কিন্তু কোনও ক্ষেত্রেই ভুয়ো ভোটারের অস্তিত্ব মেলেনি বলে জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকেরা।
বিষ্ণুপুরের মহকুমা শাসক প্রসেনজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘যে তালিকা নিয়ে অভিযোগ হয়েছিল, তা অনেক আগের। সেই তালিকায় অল্প সংখ্যক মৃত ভোটারের নাম থেকে গিয়েছিল। পরে সেই নামগুলি বাদ পড়ে যায়। নির্বাচন কমিশনের দুই প্রতিনিধি এসে চারটি বিধানসভার বিভিন্ন বুথে ঘুরে অভিযোগ খতিয়ে দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।’’ বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে যে ভোটার তালিকা আমরা দেখেছিলাম, তাতে বহু ভোটারের দু’জায়গায় নাম দেখা গিয়েছিল। তাই আমরা নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছিলাম। পরবর্তীতে সেই তালিকা সংশোধন হয়ে থাকতে পারে। আমরা চাই স্বচ্ছতার সঙ্গে ভোট হোক।’’ বড়জোড়ার তৃণমূল বিধায়ক অলোক মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিজেপির কথা যে শুনবে, সেই ঠকবে। সৌমিত্র খাঁ গত দশ বছর সাংসদ ছিলেন। কিন্তু কোনও কাজ করেননি। মানুষ জানতে চাইছে দশ বছরের পঞ্চাশ কোটি টাকায় তিনি কী করেছেন? এখন নির্বাচনের মুখে মানুষের নজর ঘোরাতে এ সব মিথ্যা অভিযোগ করে বেড়াচ্ছেন, তা আবার প্রমাণ হয়ে গেল।’’