কালীপুজোর আগে গয়না বিছিয়ে বসে রয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। — ফাইল চিত্র।
অনুব্রত মণ্ডলের (কেষ্ট) কালীপ্রতিমার জন্য রাখা সোনার গয়নার কাগজপত্র নিয়ে বোলপুরের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে বেরোল ইডি। বুধবার দুপুর ১২টা নাগাদ বোলপুরের ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে যান কেন্দ্রীয় সংস্থার পাঁচ আধিকারিক। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, তার পর থেকে প্রায় ছ’ঘণ্টা ধরে ওই ব্যাঙ্কে তল্লাশি চালানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে ব্যাঙ্কের আধিকারিকদের।
বোলপুরে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে প্রতি বছরই ধুমধাম করে কালীপুজোর আয়োজন করতেন বর্তমানে জেলবন্দি তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। কালীপ্রতিমাকে সাজানো হত বিপুল সোনার অলঙ্কারে। সেই সব গয়নাই ছিল ব্যাঙ্কটির লকারে। ব্যাঙ্ক সূত্রে খবর, ওই লকার দু’টির মালিক শিবনাথ রায় এবং সুদীপ ভট্টাচার্য। শিবনাথ বোলপুর পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আর সুদীপ পুরসভার কর্মী। বুধবার দু’জনকেই ব্যাঙ্কে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা। ইডি সূত্রে খবর, দু’টি লকার মিলিয়ে মোট ৫৬০ ভরি গয়না রয়েছে। সেই পরিমাণ গয়নার কাগজপত্র ব্যাঙ্ক আধিকারিকেরা তদন্তকারীদের দেখাতে পারেননি। যে সব কাগজপত্র মিলেছে, তা নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
১৯৮৮ সাল থেকে শুরু হওয়া বোলপুরের ওই কালীপুজোয় জাঁকজমক শুরু হয় তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকে। যত দিন গিয়েছে, দলের শ্রীবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে পুজোর আয়োজনও। মাঝে কেবল মাতৃবিয়োগ ও স্ত্রীর মৃত্যুর কারণে কালীপ্রতিমাকে নিজের হাতে সাজাতে পারেননি অনুব্রত। ২০২০ সালে কালীকে ৩০০ ভরির বেশি সোনার গয়নায় সাজানো হয়েছিল। ২০২১ সালে সোনার মুকুট, বাউটি, বাজুবন্ধ, কানের দুল, গলার হার, হাতের আংটি, কোমরের বিছে মিলিয়ে প্রায় ৫৬০ ভরি সোনার গয়নায় কালীপ্রতিমাকে সাজিয়েছিলেন কেষ্ট। শোনা যায়, ওই গয়নার আনুমানিক বাজারমূল্য ছিল আড়াই কোটি টাকারও বেশি। গরু পাচার মামলায় অনুব্রত সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর অবশ্য পরিস্থিতি বদলে যায়। পুজোয় জাঁকজমক কমে আসে। সোনার মহার্ঘ গয়নার জায়গা নেয় ইমিটেশনের গয়না।