পুরনো সেই পুজোর কথা: কালীপুজোর আগে গয়না বিছিয়ে বসে রয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। — ফাইল চিত্র।
বোলপুরের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে ইডির হানা। তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে প্রতি বছরই ধুমধাম করে কালীপুজোর আয়োজন করতেন বর্তমানে জেলবন্দি তৃণমূলের বীরভূম জেলার সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। কালীপ্রতিমাকে সাজানো হত বিপুল সোনার অলঙ্কারে। এই ব্যাঙ্কের শাখার লকারেই রাখা আছে সেই গয়না। সূত্রের খবর, সে বিষয়ে খোঁজখবর করতে ব্যাঙ্কের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলতেই ইডি আধিকারিকেরা বোলপুরের সেই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখায় গিয়েছেন।
ঘড়ির কাঁটা তখন বারোটার গণ্ডি পেরিয়েছে সদ্য। বোলপুরের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সামনে এসে দাঁড়ায় কেন্দ্রীয় এজেন্সির গাড়ি। কেন্দ্রীয় বাহিনী ব্যাঙ্ক চত্বর ঘিরে ফেলে। তার পর ব্যাঙ্কের ভিতরে প্রবেশ করেন জনা পাঁচেক ইডি আধিকারিক। সূত্রের খবর, বীরভূম জেলা তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় হিসাবে পরিচিত বোলপুর পার্টি অফিসে প্রতি বছরই ধুমধাম করে কালীপুজোর আয়োজন করতেন অনুব্রত। কালীপ্রতিমাকে যে গয়নায় সাজানো হত, সেই গয়না রাখা থাকে এই ব্যাঙ্কের শাখায়। সেই সংক্রান্ত বিষয়ে খোঁজখবর নিতেই ইডির হানা।
সূত্রের খবর, ব্যাঙ্কের ভিতরে ঢুকে ব্যাঙ্ককর্মী এবং আধিকারিকদের জিজ্ঞাসাবাদ এবং কাগজপত্র খতিয়ে দেখছেন ইডি আধিকারিকরা। এর আগেও গরু পাচার মামলায় যখন অনুব্রতকে তলব করা হয়েছিল, তখন বার বার এই গয়না নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। এই মুহূর্তে যখন অনুব্রত তিহাড় জেলে বন্দি, তখন আবার এই গহনা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ ও কাগজপত্র খতিয়ে দেখছেন ইডি আধিকারিকরা।
১৯৮৮ সাল থেকে শুরু হওয়া এই পুজোর জাঁকজমক শুরু হয় তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকে। যত দিন গিয়েছে দলের শ্রীবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে পুজোর আয়োজনও। মাঝে কেবল মাতৃবিয়োগ ও স্ত্রীর মৃত্যুর কারণে কালীপ্রতিমাকে নিজের হাতে সাজাতে পারেননি অনুব্রত। ২০২০ সালে কালীকে ৩০০ ভরির বেশি সোনার গয়নায় সাজানো হয়েছিল। ২০২১ সালে সোনার মুকুট, বাউটি, বাজুবন্ধন, কানের দুল, গলার হার, হাতের আংটি, কোমরের বিছে মিলিয়ে প্রায় ৫৬০ ভরি সোনার গয়নায় কালীপ্রতিমাকে সাজিয়েছিলেন অনুব্রত। শোনা যায়, ওই গয়নার আনুমানিক বাজারমূল্য ছিল আড়াই কোটি টাকারও বেশি। গরু পাচার মামলায় অনুব্রত সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে অবশ্য পরিস্থিতি বদলে যায়। পুজোয় জাঁকজমক কমে আসে। সোনার মহার্ঘ গয়নার জায়গা নেয় ইমিটেশনের গয়না।