রামপুরহাটে বিজেপির পদযাত্রা। রয়েছেন দিলীপ ঘোষ ও লকেট চট্টোপাধ্যায়। বুধবার। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম
তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল গরু পাচার মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হওয়া ইস্তক বীরভূমে নিজেদের রাজনৈতিক কর্মসূচি অনেকগুণ বাড়িয়েছে বিজেপি। পঞ্চায়েত ভোটকে মাথায় রেখে অনুব্রতের অনুপস্থিতিতে বীরভূমে নিজেদের পায়ের মাটি শক্ত করতে মরিয়া বিজেপি। জনসভা করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বোলপুরে মহামিছিল করেছেন দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এ বার রামপুরহাটে সভা ও মিছিল করলেন বিজেপি-র সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ। সভা থেকে তীব্র আক্রমণ করলেন অনুব্রত এবং শাসকদলকে।
শিক্ষক নিয়োগে ‘দুর্নীতি’ এবং গরু-কয়লা-পাথর-বালি ‘পাচারের’ বিরুদ্ধে নবান্ন অভিযান করবে বিজেপি। সেই অভিযানে জেলার বিজেপি কর্মীদের শামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বুধবার রামপুরহাটে কর্মসূচি ছিল গেরুয়া শিবিরের। সভা শুরুর আগে রামপুরহাট শহরে পদযাত্রা করেন বিজেপি নেতা-কর্মীরা। শ্রীফলা মোড় থেকে শুরু করে পদযাত্রা রামপুরহাট শহরের প্রধান প্রধান রাস্তা ঘুরে পাঁচমাথা মোড়ে শেষ হয়। মিছিলে হাঁটেন দিলীপ ঘোষ, দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদিকা সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়, রাজ্য সহ সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল, রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়, দুবরাজপুরের বিধায়ক অনুপ সাহা। পাঁচ হাজারের বেশি বিজেপি কর্মী পা মেলান মিছিলে। মিছিলে ছিল নকল জেল। যার ভিতরে বন্দি হিসেবে দেখানো হয়েছে অনুব্রত মণ্ডল এবং পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে।
পরে পাঁচমাথা মোড়ের সভায় লকেট কটাক্ষের সুরে বলেন, ‘‘বীরভূমে বড় চোর ধরা পড়েছে। আরও ছোট-মাঝারি চোর আশপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সব ধরা পড়বে। পঞ্চায়েতে দুর্নীতি থেকে শুরু করে যারা মানুষের ঘর থেকে টাকা লুট করেছে, সবার তালিকা সিবিআই করেছে।’’ মুরারইয়ে নির্বাচনী প্রচারের সময় তাঁর গাড়ি ভাঙচুরের কথা উল্লেখ করে লকেট বলেন, ‘‘কেষ্ট মণ্ডলের নির্দেশে বীরভূম জেলায় সন্ত্রাস করে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিরোধীদের মনোনয়ন জমা দিতে দেওয়া হয়নি।’’ তাঁর দাবি, ‘‘এখন চালকলের ভিতরে চালের বদলে দামি দামি গাড়ি পাওয়া যাচ্ছে আর মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, তৃণমূল দলটা দুর্নীতি-মুক্ত। তা হলে এই গাড়িতে টাকা কোথায় যেত, মাটির তলায় না কালীঘাটে?’’ কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৈরি থাকবেন। কার কত ক্ষমতা মনোনয়ন দিতে দেয় কি না, দেখে নেব।’’
অন্য দিকে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘বীরভূমে গরিব লোকের বাস। আর সেই জেলায় বালি, পাথর, কয়লা গরু পাচারের টাকায় তৃণমূলের জেলা সভাপতির দেহরক্ষী সেহগাল হোসেনের দেড়শো কোটি টাকার সম্পত্তি। মেয়ের নামে, নিজের নামে, পুরসভার কর্মীর নামে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি।’’ তাঁর দাবি, জেলায় টোল বসিয়ে কোটি কোটি টাকা লুট হয়েছে। সিবিআই-ইডি সব দেখছে। তারাপীঠ রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদেও কোটি কোটি টাকা দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ করেন দিলীপ ঘোষ।
লকেট চট্টোপাধ্যায়, দিলীপ ঘোষ সহ বিজেপি নেতারা রাজ্যে দুর্নীতির প্রতিবাদে কর্মীদের আগামী নবান্ন অভিযানে সামিল হওয়ার আহ্বান জানান।