সোমবার শুরু হয়ে গেল পুজো! —নিজস্ব চিত্র ।
মাঠে ঘাটে সবুজ ধান গাছ, কাশফুল আর মাটিতে ঝরে পড়া শিউলি। আকাশ-বাতাস জানান দিচ্ছে পুজো আসছে। বাঙালির প্রাণের পুজো দুর্গোৎসব আসতে দিন কুড়ি দেরি থাকলেও বীরভূমের দুবরাজপুর ব্লকের বালিজুড়ি গ্রামের রায় এবং চট্টোপাধ্যায় পরিবারের পুজো শুরু হয়ে গেল সোমবারই। কয়েক’শো বছরের প্রাচীন রীতি অনুসারে কৃষ্ণপক্ষের নবমীতে দুর্গাপুজো শুরু করে দেয় এই দুই পরিবার। দুর্গানবমীর এক পক্ষ আগে দেবী আরাধনা শুরু হয়ে গিয়েছে।
সোমবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ বাদ্য মঙ্গলঘট নিয়ে এসে দুর্গাপুজো শুরু হয়েছে। ঠিক যেমনটা দুর্গা-সপ্তমীর সকালে হয়। এই পুজো সম্পর্কে ওই পরিবারের সদস্য পুলক রায় বলেন, ‘‘বালিজুড়ি গ্রামের সবথেকে প্রাচীন পুজো আমাদের। আজ থেকে প্রায় সাড়ে চারশো বছর আগে এক কাপালিক এই পুজো শুরু করার কথা বলেন। তার পর রায় বংশের জিতবাহন রায় এই পুজোর প্রচলন করেন। সেই থেকে রীতি মেনে রায় পরিবার কৃষ্ণপক্ষের নবমীতে যমুনা সায়র থেকে রায় এবং চট্টোপাধ্যায়— এই দুই পরিবার মঙ্গলঘট আনে। শুরু হয় দুর্গার আরাধনা।’’ মহাষ্টমীতে এখানে বলিদানের রেওয়াজ এখনও আছে।
চট্টোপাধ্যায় পরিবারের পুজো সম্পর্কে সৌমিত্র বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই পুজো আরম্ভ করেছিলেন তেকুরাম চট্টোপাধ্যায়। তিনি রাজনগরের নবাবের দেওয়ান ছিলেন। এক সময় বীরভূমের রাজধানী ছিল রাজনগর। রাজনগরের নবাব আলিনকি খান সুচারুভাবে দুর্গাপুজো চালানোর জন্য ৬৪ বিঘা জমি, সাতটি পুকুর এবং একটি বড় পুষ্করিণী দান করেন। সেই থেকে রীতি মেনে কৃষ্ণপক্ষের নবমীতে চট্টোপাধ্যায়ের পরিবারে দুর্গাপুজো শুরু হয়ে যায়। বোধনের মাধ্যমে শুরু হয়ে যায় চট্টোপাধ্যায় পরিবারের দুর্গাপুজো।’’ উল্লেখ্য, বর্তমানে চট্টোপাধ্যায়, মুখোপাধ্যায় এবং বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবার মিলে এই পুজো করে। মহালয়ার আগেই দুর্গাপুজোর আনন্দে মেতে উঠেছেন দুবরাজপুরের বালিজুড়ি গ্রাম।