India-Bangladesh Border

‘দুষ্কৃতী-দৌরাত্ম্য’ রুখতেই বেড়া, দাবি গ্রামবাসীর

শুক্রবার কোচবিহারের মেখলিগঞ্জ মহকুমার দহগ্রাম-আঙ্গারপোতার সীমানার জ়িরো পয়েন্টে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া শুরু করে ভারতীয় গ্রামের বাসিন্দারা।

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ , তাপস রায়

শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২৫ ০৭:১১
Share:

সীমান্তে প্রহরায় বিএসএফ জওয়ান। ছবি তাপস রায়।

এক সময় সখ্য ছিল সীমান্তের দুই গ্রামের। কেউ বিপদে পড়লে একে অপরের পাশে দাঁড়াতেন। এক সঙ্গে চাষবাসের কাজও করতেন। চোরাকারবারীদের দৌরাত্ম্য পাল্টে দিয়েছে দু’পারের সম্পর্ক। এক দিকে, ভারতের মেখলিগঞ্জের অন্দরান খড়খরিয়া, অন্য দিকে বাংলাদেশের দহগ্রাম-আঙ্গারপোতা। ভারতীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দিনের পর দিন তাঁদের খেতের ফসল নষ্ট করে চোরাকারবারীরা। বাড়ি থেকে গরু চুরি হয়ে যায়। কেউ প্রতিবাদ করলে উড়ে আসে হুমকি। বিজেপির স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য শেফালি রায়ের স্বামী অনুপ রায় বলেন, ‘‘বাংলাদেশের দুষ্কৃতীদের জন্য আমাদের ঝামেলার শেষ নেই। বিএসএফ সতর্ক থাকলেও কাঁটাতার না থাকায় চলে চোরাকারবার। তাতে আমাদেরশষ্যের ক্ষতি হয়। তাই বেড়া দিতেশুরু করেছি।’’

Advertisement

শুক্রবার কোচবিহারের মেখলিগঞ্জ মহকুমার দহগ্রাম-আঙ্গারপোতার সীমানার জ়িরো পয়েন্টে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া শুরু করে ভারতীয় গ্রামের বাসিন্দারা। তা নিয়ে আপত্তি তোলে বিজিবি এবং বাংলাদেশিরা। যা নিয়ে উত্তেজনা ছড়ায়। শেষ পর্যন্ত বিএসএফের মধ্যস্থতায় দু’কিলোমিটার এলাকা জুড়ে কাঁটাতারের বেড়া দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আরও অন্তত চার কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বেড়া দেওয়া বাকি রয়েছে। আজ, রবিবার অথবা কাল, সোমবারের মধ্যে সেই কাজ শেষ হবে।

এরই মধ্যে অভিযোগ, ওই সীমান্তের কাছের ফুলকাডাবরির একটি অংশে বেশ কয়েক বিঘা জমির চা, তামাক ও ভুট্টা খেত নষ্ট করে দিয়েছে বাংলাদেশের দুষ্কৃতীরা। অভিযোগ, সীমান্তে উত্তেজনা ছড়াতেই ওই ঘটনা ঘটিয়েছে দুষ্কৃতীরা। ক্ষতিগ্রস্ত নকুল রায় বলেন, ‘‘বিচ্ছিন্ন ভাবে পাঁচটি জায়গার চা-গাছ কেটে নিয়ে গিয়েছে বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা। সব মিলিয়ে প্রায় বিঘা খানেক চা বাগান নষ্ট হয়েছে।’’

Advertisement

দহগ্রাম-আঙ্গারপোতা ভারতের ভিতরে বাংলাদেশের একটি অংশ। বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ড থেকে ওই অংশে এক সময়ে যাতায়াতের কোনও রাস্তা ছিল না। ১৯৯২ সালে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী ওই অংশে যাতায়াতের জন্য তিনবিঘা করিডর ব্যবহারের অনুমতি দেয় ভারত। তার পর থেকে ওই অংশের মানুষ বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডে যাতায়াত শুরু করেন। অভিযোগ, তার পর থেকে ওই বাংলাদেশের ওই দু’টি গ্রামেজনসংখ্যা অনেক বেড়ে যায়। বাংলাদেশের নানা জায়গার মানুষ সেখানে বসতি স্থাপন করেন। তার পর থেকে দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য বাড়ে। অভিযোগ, তিনবিঘা করিডরে যাতায়াতের সুযোগ নিয়ে চোরাকারবারীরা সক্রিয় হচ্ছে। ভারতীয় গ্রামের এক বাসিন্দা নবকুমার রায় বলেন, ‘‘মাস খানেক আগে পাচারের সময়ে একটি গরু গোবর রাখার গর্তে পড়ে যায়। তা নিয়ে বিএসএফকে খবর দেন এক প্রতিবেশী। তাঁর বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় বাংলাদেশি দুষ্কৃতী।’’ দহগ্রাম-আঙ্গারপোতা এই দুই গ্রাম ঘেঁষে গিয়েছে তিস্তা নদী। সেখানেও কোনও কাঁটাতার নেই। সেই পথেও পাচার হচ্ছে বলে অভিযোগ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement