ছবি: সংগৃহীত
কিছু সরকারি আধিকারিকের কাজে অবহেলা ও বিভিন্ন দফতরের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব সরকারের ভাবমূর্তিতে প্রভাব ফেলছে বলে সম্প্রতি নবান্নে উষ্মা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই বৈঠকেই মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ প্রত্যন্ত এলাকায় যেতে বলেন জেলাশাসক ও বিডিও-দের। ডিএম-দের বছরে দু’বার ব্লক স্তরে এবং বিডিও-দের পঞ্চায়েত স্তরে গিয়ে সমস্যার সুরাহা করতে নির্দেশ দেন। আর এক ধাপ এগিয়ে বুধবার বাঁকুড়ার জেলাশাসক বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকদের ডেকে তাঁদেরও সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে কাজের অগ্রগতি খতিয়ে দেখতে বললেন। শুধু তা-ই নয়, সাধারণ মানুষের মুখ থেকে সরাসরি সমস্যা শোনা থেকে বিভিন্ন দফতরের মধ্যে সমন্বয় বাড়াতে বৈঠকের নির্দিষ্ট দিনও বেঁধে দিলেন বাঁকুড়ার জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস।
এ দিন বাঁকুড়ার সংখ্যালঘু ভবনে জেলার সমস্ত দফতরের আধিকারিকদের ডেকে তাঁদের সাপ্তাহিক কাজের ‘রুটিন’ জানিয়ে দেন জেলাশাসক। প্রশাসন সূত্রে খবর, সপ্তাহের কাজের পাঁচটি দিন ঠিক কী কী করতে হবে, তা প্রত্যেকটি দফতরের আধিকারিককে জানিয়ে দেওয়া হয়। বৈঠক সেরে বেরিয়ে জেলার একটি দফতরের আধিকারিক বলেন, “পড়াশোনার পর্ব মেটার পরে, রুটিনের সঙ্গে সম্পর্কেও ইতি পড়েছিল। তবে এ বার মনে হচ্ছে নতুন করে ফের রুটিন মেনে পা ফেলতে হবে।’’
আবার কয়েকটি দফতরের আধিকারিকেরা ‘রুটিন’ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। তাঁদের মতে, ঠাসা কর্মসূচিতে সপ্তাহে একটি মাত্র দিন হয় বৃহস্পতিবার, নয়তো শুক্রবার ফাঁকা পাওয়া যাবে। একে দফতরে কাজের শেষ নেই। ওই একটি দিনে সব কাজ করা কতটা করা সম্ভব, তা নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা। জেলাশাসক অবশ্য দাবি করেন, ‘‘নিয়ম মেনে কাজ করলে দফতরের কোনও কাজই আটকে থাকার কথা নয়।’’
এ দিকে কেবল ‘রুটিন’ দিয়েই খান্ত নন জেলাশাসক। কাজ ঠিকঠাক হচ্ছে কি না তা সরেজমিনে দেখতে প্রশাসনের তরফে একটি ‘অ্যাপ’-ও তৈরি করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। জেলাশাসক জানান, বিভিন্ন দফতরের কর্মীরা সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে এলাকায় গিয়ে কাজ দেখছেন কি না সেই তথ্য ওই ‘অ্যাপ’-এ ‘আপলোড’ করতে হবে। আগামী দিনে জেলার সাধারণ মানুষও যাতে ওই ‘অ্যাপ’-এর মাধ্যমে কাজের অগ্রগতি জানতে পারেন, সে ব্যবস্থার চিন্তাভাবনা চলছে।
জেলাশাসক বলেন, “আমাদের লক্ষ্য প্রতিটি দফতর নিয়ম মেনে কাজ করে মানুষকে সুবিধা দিক। তার জন্য দফতরের তরফে নিয়মিত এলাকায় গিয়ে কাজের অগ্রগতি দেখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেই কাজ করতে হবে এবং কাজের অগ্রগতি অ্যাপে আপলোড করতে হবে।”