মাস্ক ছাড়াই। শুক্রবার পুরুলিয়ার জয়পুরের মিছিলে। ছবি: সুজিত মাহাতো।
লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে ভাল ফল। তার আগে, পঞ্চায়েত নির্বাচনেও তৃণমূলের সঙ্গে সমানে টেক্কা দেওয়া। পুরুলিয়ার জয়পুর বিজেপির ‘শক্ত ঘাঁটি’ হিসাবে পরিচিত হলেও দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের সভায় শুক্রবার তেমন ভিড় দেখা গেল না।
পুলিশের পর্যবেক্ষণ, মিছিলে হাজার দেড়েক লোক থাকলেও তার পরে, সভায় মেরে কেটে চার-পাঁচশো জন হাজির ছিলেন। জয়পুরের দলীয় বিধায়ক নরহরি মাহাতোর যদিও দাবি, “এখন ধান কাটার কাজে লোকজন ব্যস্ত। তার পরেও মিছিল ও সভায় যথেষ্ট লোকজন ছিলেন।”
এ দিকে, বিজেপির জনপ্রতিনিধি, বিধায়কদের তৃণমূলে যোগ দিতে পুলিশ হুমকি দিচ্ছে বলে এ দিনও অভিযোগ করেন দিলীপ।
বিজেপি সূত্রে খবর, আসন্ন পুর-নির্বাচনকে লক্ষ্যে রেখে এ দিন জেলার অন্যতম দুই পুরসভা, পুরুলিয়া ও ঝালদার মধ্যবর্তী এলাকা জয়পুরে রাজনৈতিক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। প্রথমে মিছিল ও পরে ছিল সভার আয়োজন। দুপুর ৩টে নাগাদ জয়পুরের কালীমন্দির থেকে মিছিলটি
শুরু হয়ে শেষ হয় রানিবাঁধ
রেলগেটের কাছে।
দিলীপ ছাড়াও মিছিলে পা মেলান বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায়, নদীয়ারচাঁদ বাউড়ি, বাণেশ্বর মাহাতো, নরহরি মাহাতো, সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো, জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী প্রমুখ। মিছিল শেষে, সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে দিলীপ বলেন, “লোকসভা নির্বাচনে পুরুলিয়ায় তৃণমূল হেরেছে। বিধানসভাতেও বেশির ভাগ আসনে জিতেছে বিজেপি। পুর-নির্বাচন আসছে। সেখানেও তৃণমূলকে হারাবেন পুরুলিয়ার বাসিন্দারা।”
বিধানসভা নির্বাচনে জয়পুর আসনে জিতলেও, জয়পুর পঞ্চায়েত সমিতিতে তৃণমূলের সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেও শেষ পর্যন্ত বোর্ড গঠন করতে পারেনি বিজেপি। সমিতিতে ক্ষমতা ধরে রেখেছে তৃণমূল। উল্টে রোপো পঞ্চায়েত বিজেপির হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে তৃণমূল। এ পরিস্থিতিতে, দলের নেতা-কর্মীদের উজ্জীবিত করতেই জয়পুরকে বেছে নেওয়া, মত অনেকের। কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে দিলীপ বলেন, “গুন্ডামি, লুটপাটের রাজনীতি বেশি দিন স্থায়ী হয় না। আপনাদের মনের জোর ধরে রাখতে হবে। আমাদের কার্যকর্তাদের দেখে মানুষজন আশা-ভরসা পাচ্ছে।”
পাশাপাশি, পুলিশের বিরুদ্ধে তৃণমূলের হয়ে কাজ করা ও তৃণমূলের দুর্নীতির অভিযোগের প্রসঙ্গ তুলে তাঁর দাবি, “রাজ্যে উন্নয়ন স্তব্ধ। তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা সরকারি প্রকল্প থেকে কাটমানি খেতে ব্যস্ত। পুরুলিয়ার যুবকদের কাজের সন্ধানে ভিন্ রাজ্যে যেতে হচ্ছে।”
দুর্নীতির অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতা সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, “পুরভোটে বিজেপি কুপোকাত হবে।”