গ্রামবাসীদের অভিযো শোনার পর ঠিকাদারকে তক্ষুণি ডেকে পাঠান তৃণমূল বিধায়ক অরূপ চক্রবর্তী। —নিজস্ব চিত্র।
‘দিদির দূত’ হয়ে এলাকার ভালমন্দের খোঁজ নিতে গিয়ে স্থানীয়দের ক্ষোভের মুখে পড়লেন তৃণমূল বিধায়ক অরূপ চক্রবর্তী। রাস্তা নিয়ে মানুষের অভিযোগ শুনে পুরো দায় চাপালেন ঠিকাদারের উপর। শুধু ধমকই নয়, তালড্যাংরার বিধায়ক প্রয়োজনে ঠিকাদার বাতিলের নির্দেশ দিলেন পঞ্চায়েত প্রধানকে।
শনিবার বাঁকুড়ার সিমলাপাল ব্লকের দুবরাজপুর গ্রামে গিয়ে এক যুবকের ক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন তালড্যাংরার বিধায়ক। তার রেশ কাটতে না কাটতেই সোমবার ‘দিদির দূত’ হিসাবে নিজের বিধানসভা এলাকার গুন্নাথ গ্রামে যান অরূপ। ওই গ্রাম পরিদর্শন করে ঠিক বেরিয়ে আসছেন, এমন সময় বিধায়ককে ঘিরে নিজেদের অভাব-অভিযোগ জানাতে শুরু করেন গ্রামবাসীরা। তাঁদের অভিযোগ, ‘‘ডাঙারামপুর থেকে মুদিনা গ্রাম পর্যন্ত, পাঁচ কিলোমিটার বেহাল রাস্তা অবিলম্বে মেরামত করতে হবে।’’ তা ছাড়া গ্রামে পানীয় জল সরবরাহের ব্যবস্থা করে দেওয়ারও দাবি ওঠে। স্থানীয়দের ‘পথের দাবি’ শুনে ওই রাস্তার একাংশ সংস্কারের বরাত পাওয়া ঠিকাদারকে তক্ষুণি তলব করেন বিধায়ক। কিছু ক্ষণের মধ্যে সেখানে উপস্থিত হন বরাত পাওয়া ঠিকাদার শুভাশিস মণ্ডল।
কেন সময়ে কাজ শেষ হয়নি, এই প্রশ্নের উত্তরে ঠিকাদার বিধায়ককে জানান, রাস্তা সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় বালি এবং পাথর মেলেনি। তাই কাজ শুরু করতে দেরি হচ্ছে। এই ব্যাখ্যায় একদমই খুশি হননি বিধায়ক। ঠিকাদারকে ধমক দিয়ে বলেন, ‘‘কাজের বরাত পাওয়ার পরেও কাজ শুরু হয়নি কেন? কোনও কথা শুনতে চাই না। ৭ দিনের মধ্যে কাজ শুরু হওয়া চাই।’’ স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান টুটু গোস্বামী এবং পঞ্চায়েতের আধিকারিকদের বিধায়ক বলেন, ‘‘৭ দিনের মধ্যে রাস্তার কাজ শুরু হলে ভাল। না হলে ওই ঠিকাদারের বরাত বাতিল করুন। তার পর ওই ঠিকাদারকে আর পঞ্চায়েতে ঢুকতে দেবেন না।’’
গুন্নাথ গ্রামের বাসিন্দা শৈলেন পাত্র, হিমাংশু পাত্রদের অভিযোগ, ‘‘ডাঙারামপুর থেকে মুদিনা পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার রাস্তা এক দশক আগে তৈরি হয়েছিল। তার পর থেকে আর কোনও সংস্কারের কাজ হয়নি। রাস্তার অবস্থা বেহাল। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে ব্লক স্তরে বারেবারে আবেদন জানিয়েও কাজের কাজ হয়নি। নিত্যদিন দুর্ঘটনা হচ্ছে। পাশাপাশি নলবাহিত পানীয় জল সরবরাহ থেকে বঞ্চিত গুন্নাথ গ্রামের মানুষ। এদিন বিধায়ককে কাছে পেয়ে সেকথাই জানিয়েছি।’’ এ নিয়ে বিধায়ক বলেন, ‘‘১৫ দিন আগে রাস্তা সংস্কারের ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ হয়ে গিয়েছে। তার পরও কাজ শুরু করেনি ঠিকাদার। আমি কেন গ্রামের মানুষের কাছে রাস্তা সংক্রান্ত অভিযোগ শুনব! পঞ্চায়েতের আধিকারিকদের বলেছি, নোটিস দিয়ে ৭ দিনের মধ্যে কাজ শুরু করতে হবে। না হলে ওই বরাত বাতিল করা হবে।’’ পাশাপাশি গ্রামের মানুষের পানীয় জল সংক্রান্ত অভিযোগ নিয়ে বিধায়ক বলেন, ‘‘জেলার অধিকাংশ গ্রামে নলবাহিত পানীয় জল পৌঁছে গিয়েছে। মুকুটমণিপুর থেকে নলবাহিত পানীয় জল সরবরাহ প্রকল্পের কাজ চলছে। ওই কাজ সম্পূর্ণ হলে আগামিদিনে গুন্নাথ গ্রামেও নলবাহিত পানীয় জল পৌঁছে যাবে।’’