শান্তিনিকেতনে পূর্বপল্লির মাঠে জেলাশাসক বিধান রায়ের ফোনে ভার্চুয়াল ভাবে ‘বিকল্প’ পৌষমেলা উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিন বছর পরে শান্তিনিকেতনের পূর্বপল্লি মাঠে ফিরল শান্তিনিকেতনের পৌষমেলা। চেনা মেলার মাঠেই এ বার মেলা হলেও বিশ্বভারতী মেলার আয়োজন না করায় এ বার সেই ‘বিকল্প’ মেলার উদ্যোক্তা জেলা প্রশাসন। রবিবার মেলার উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার্তা দিলেন, বিশ্বভারতীতে ‘স্বৈরাচার’ চলবে না।
বিদ্যুৎ চক্রবর্তী উপাচার্য থাকাকালীন নানা বিষয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বভারতী। বিদ্যুৎ চক্রবর্তী উপাচার্য পদে থাকাকালীন গত তিন বছর মেলার মাঠে হয়নি পৌষমেলাও। বিদ্যুতের মেয়াদ শেষ হবার পর এ বার ফের মেলার মাঠে বিকল্প পৌষমেলা আয়োজিত হওয়ায় খুশি পড়ুয়া, আশ্রমিক, স্থানীয় ব্যবসায়ী— সকলেই। এ দিন ভার্চুয়াল মাধ্যমে মেলার উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী সেই প্রসঙ্গ তুলে বলেন, ‘‘এই মেলা একবার মন্বন্তর, দেশের সাম্প্রদায়িক অশান্তি ও করোনার কারণে তিন বার বন্ধ হয়েছিল। এ ছাড়াও কিছু বিতর্কিত কারণের জন্য কয়েক বছর বন্ধ ছিল। যা মানুষ ভালোভাবে নেয়নি।’’ সেই সঙ্গেই তিনি বলেন, ‘‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই জায়গা কেউ কলুষিত করুক, চাই না। কোনও স্বৈরাচারী মনোভাব নিয়ে বিশ্বভারতী চালালে হবে না। আশ্রমিক থেকে পড়ুয়া সকলকেই সম্মান দিতে হবে।’’
এই প্রথম বিশ্বভারতীর মাঠে জেলা প্রশাসনের হওয়া পৌষমেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী। যা পৌষমেলার ইতিহাসে এই প্রথম বলেও মনে করছেন অনেকেই। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জায়গাকে কেউ কলুষিত করুক তা চাই না। বিশ্বভারতীর সমস্ত আশ্রমিককে আমি আমার প্রণাম ও অন্যদের শ্রদ্ধা জানাই। সর্তকতা, সাবধানতা, ভালবাসার সঙ্গে বিশ্বভারতীর সার্বিক ঐতিহ্য মেনে এই মেলা আপনারা করুন। সকলকে অভিনন্দন রইল।”
ভার্চুয়াল উদ্বোধনে অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকেও সম্মাননা জ্ঞাপন করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেনকেও আমি এখান থেকে সম্মান জানাচ্ছি। উনি এখানে থাকলে নিশ্চয়ই এই অনুষ্ঠানে আসতেন। তিনি বিদেশে কাজেরমধ্যে আছেন তাই যোগ দিতে পারেননি।’’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশ্বভারতী ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সঞ্জয়কুমার মল্লিককে দেখা যায়নি। তিনি বলেন, “বিশেষ কারণে আমি সেখানে আসতে পারিনি।”