পুরভবনে শীলা ও পূর্ণিমা। ফাইল চিত্র
আদালতের নির্দেশে পুরপ্রধানের দায়িত্বে এসেছিলেন। তবে দিনকয়েক যেতে না যেতে বৃহস্পতিবার সেই আদালতের নির্দেশে ঝালদার পুরপ্রধানের দায়িত্ব থেকে সরে যেতে হচ্ছে নিহত কংগ্রেস পুরপ্রতিনিধি তপন কান্দুর স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দুকে। আগের মতো ফের উপপুরপ্রধানের দায়িত্ব সামলাবেন তিনি। তবে এ নিয়ে কোনও দুঃখ নেই দাবি করে পূর্ণিমা বলছেন, “দিদি (শীলা চট্টোপাধ্যায়) দায়িত্ব পেয়েছেন। এত আনন্দের খবর। পদ বড় কথা নয়। এলাকার সার্বিক উন্নয়নই আমাদের লক্ষ্য।”
ঝালদা মহকুমা প্রশাসন পুরপ্রধানের দায়িত্বে থাকা শীলার পুরপ্রতিনিধি পদ খারিজের পরে হাই কোর্টের নির্দেশে গত ২১ জানুয়ারি স্বামীর ছবি আঁকড়ে পুরপ্রধানের পদে বসেন পূর্ণিমা। আততায়ীদের গুলিতে তপন নিহত হওয়ার পরে থেকে পূর্ণিমা ও তাঁর পরিবারের প্রতি এলাকায় যে সহানুভূতির হাওয়া রয়েছে, তাকে মান্যতা দিয়ে পূর্ণিমাকে দায়িত্ব আনে কংগ্রেস, পর্যবেক্ষণ রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের। যদিও কংগ্রেসের দাবি, নিয়ম মেনেই ওই পদে দায়িত্ব সামলেছেন পূর্ণিমা।
ঘটনা হল, তপনের মৃত্যুর পরে ঝালদায় প্রতিবাদের যে ঝড় উঠেছিল, তাতে বিরোধী দলের লোকজনের পাশাপাশি অরাজনৈতিক বলে পরিচিত অনেককে এককাট্টা করার কাজে সফল হয়েছিল কংগ্রেস। পাশাপাশি, এলাকায় মুষড়ে পড়া দলের নেতা-কর্মীরা ওই প্রতিবাদের ঝাঁজে অনেকটা চাঙ্গা হয়ে উঠেছিলেন। পুরসভায় ক্ষমতা দখলের পরে, সেই আবহ থেকে পূর্ণিমাকে পুরপ্রধান পদে আনার একটা দাবি দলের একাংশের তরফে উঠেছে।
যদিও পুরপ্রধান পদের জন্য তুলনায় রাজনৈতিক ভাবে পরিপক্ক শীলাকে কংগ্রেস মান্যতা দেয় এবং তিনি পুরপ্রধান পদে শপথ নেন। উপপুরপ্রধান হন পূর্ণিমা। তবে, শীলা না পূর্ণিমা, সেই তর্কে যেতে রাজি নন ঝালদার আম জনতা। তাঁরা বেশি করে চাইছেন, পুরপ্রধান পদ নিয়ে চলা এই দোদুল্যমানতা বন্ধ হোক। আর পুরপ্রধান হিসেবে কাজ করার পূর্ব অভিজ্ঞতা শীলা বা পূর্ণিমা, কারও নেই। তাই কে পুরসভা কতটা সফল ভাবে পরিচালনা করতে পারবেন, তা নিয়ে পূর্বাভাস করা মুশকিল।
কংগ্রেসের পুরুলিয়া জেলা সভাপতি নেপাল মাহাতোর দাবি, দলে মানুষের হয়ে কাজ করাই মান্যতা দেওয়া হয়। কেউ পদের জন্য লালায়িত নন। দলে যা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তা আলোচনাসাপেক্ষে। তাঁর কথায়, “পুরপ্রধানের অনুপস্থিতিতে উপপুরপ্রধানের পদে থাকা পূর্ণিমা দায়িত্ব সামলেছিলেন। এ নিয়ে জটিলতার জায়গা নেই।” মন্তব্য করতে চাননি তৃণমূল নেতৃত্ব।