—প্রতীকী চিত্র।
ঘটনা ১: ২০০৬ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি সকালে পুরুলিয়া-রাঁচী ৩২ নম্বর জাতীয় সড়কে রুদড়া গ্রামের কাছে, রেললাইনে উদ্ধার পুরুলিয়ার চিকিৎসক অনিরুদ্ধ চেলের ছিন্নভিন্ন দেহ। দেহ থেকে কিছু দূরে ছিল তাঁর গাড়ি।
ঘটনা ২: বছর তিনেক আগে পুরুলিয়া-রাঁচী জাতীয় সড়কের অদূরে পুরুলিয়া মফস্সল থানার গোলবেড়া গ্রামের অদূরে একটি মাঠ থেকে এক অজ্ঞাতপরিচয় মহিলার পোড়া দেহ উদ্ধার।
ঘটনা ৩: ২০২২ সালের ২৮ মার্চ গোলবেড়া গ্রামের অদূরে জাতীয় সড়কের পাশ থেকে এক ব্যক্তির দেহ উদ্ধার।
ঘটনা ৪: ২০২২ সালের ৯ জুলাই মফস্সল থানার কানালি গ্রামে ঢোকার মুখে দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হন কানালি গ্রামের বাসিন্দা মদন পান্ডে ও তাঁর ছেলে কানাই পান্ডে।
ঘটনা ৫: ৮ জানুয়ারি ২০২৩ পুরুলিয়া মফস্সল থানার রুদড়া গ্রামের কাছে রেললাইনের পাশে একটি মাঠে এক ব্যক্তির আধপোড়া দেহ উদ্ধার হয়। পরে জানা যায়, ঝাড়খণ্ডের চাষের ওই বাসিন্দাকে অপহরণ করেছিল দুষ্কৃতীরা।
ঘটনা ৬: ২৮ অক্টোবর ২০২৩ গোলবেড়া গ্রামের অদূরে জাতীয় সড়কের পাশেই হাত- পা বাঁধা অবস্থায় এক বৃদ্ধ বেহুঁশ অবস্থায় উদ্ধার। বোকারোর ওই বাসিন্দাকে তিন মাস আগে অপহরণ করেছিল দুষ্কৃতীরা।
সব ক’টি ঘটনাই ঘটেছে ৩-৪ কিলোমিটারের মধ্যে। সব ঘটনাগুলিই পুরুলিয়া-রাঁচী ৩২ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে অথবা পুরুলিয়া-কোটশিলা রেললাইনের পাশে ফাঁকা জায়গায় ঘটেছে। বারবার ওই এলাকাতেই কেন দুষ্কৃতীরা অপরাধের জন্য বেছে নিচ্ছে? পুলিশই বা নজরদারিতে কী ব্যবস্থা নিয়েছে, প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে।
ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, ঘটনাস্থলগুলি থেকে কমবেশি ১০ কিলোমিটারের মধ্যেই ঝাড়খণ্ড সীমানা। অপরাধের পরেই দ্রুত ঝাড়খণ্ডে ঢুকে গা ঢাকা দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। তাছাড়া ওই জায়গাগুলিতে সাধারণত রাত ৮টার পরে লোক চলাচলও কমে যায়। নেই পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা। নিরিবিলি জায়গার সুযোগ অপরাধীদের নিতে চায়।
প্রশ্ন অবশ্য আরও রয়েছে। কারও কারও মতে, সড়ক পথে বোকারো থেকে পুরুলিয়া আসার সময় ঝাড়খণ্ড পুলিশ এবং পুরুলিয়ার জয়পুর থানার পুলিশের দু’টি চেকপোস্ট পার হয়ে আসতে হয়। তারপরেও কি ভাবে অনায়াসে এত সহজে অপকর্ম সারছে অপরাধীরা? একের পর এক অপরাধের ঘটনায় এই প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে আমজনতার মনে।
পুরুলিয়া জেলা পুলিশের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, ‘‘ঝাড়খণ্ড থেকে ওই জায়গাগুলি কাছে হওয়ার কারণে হয়তো দুষ্কৃতীরা সুবিধাজনক বলে মনে করতে পারে। অপরাধীরা হয়তো ভাবে, তারা অপরাধ সেরে অন্য রাজ্যে গিয়ে সহজে পার পাবে। কিন্তু ধরা শেষ পর্যন্ত পড়তেই হয়। তবে আমরা নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করার কথা ভাবছি।’’