নোটিস টাঙিয়ে বন্ধ টিকাকরণ। নিজস্ব চিত্র।
পর্যাপ্ত টিকার সরবরাহ রয়েছে । রয়েছে টিকা দেওয়ার পরিকাঠামো । কিন্তু সিরিঞ্জের অভাবে ধাক্কা খেতে চলেছে বাঁকুড়া জেলায় করোনা টিকাকরণ কর্মসূচি। সিরিঞ্জের অভাবে সোমবার বাঁকুড়া জেলার বেশ কিছু ব্লকে টিকাকরণ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয় স্বাস্থ্য দফতর । ফলে কেন্দ্রে এসেও টিকা না পেয়ে হয়রানির শিকার হতে হয় সাধারণ মানুষকে।
সূত্রের খবর, গত একসপ্তাহ ধরেই ধীরে ধীরে কমে আসছিল মজুত সিরিঞ্জের সংখ্যা। নতুন করে টিকাকরণ কেন্দ্রগুলিতে সিরিঞ্জ এসে পৌঁছয়নি। পরিস্থিতি সামাল দিতে অন্যান্য টিকার জন্য ব্যবহারের উপযোগী সিরিঞ্জ দিয়েই শুরু হয় করোনা টিকাকরণ। কিন্তু তারপরও ঘাটতি পূরণ করতে না পারায় সোমবার সকাল থেকে বেশ কিছু কেন্দ্রে টিকা দেওয়ার কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
বাঁকুড়া-২ ব্লকের কাঞ্চনপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সোমবার সকালে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে নোটিস টাঙিয়ে জানানো হয় সিরিঞ্জ না আসা পর্যন্ত কোভিড-১৯ টিকা দেওয়ার কাজ বন্ধ থাকবে। বাঁকুড়া-১ ব্লকের সিমলাপাল, শালতোড়া, বড়জোড়া-সহ বেশ কয়েকটি ব্লকেই সিরিঞ্জের অভাবে সোমবার থেকে প্রায় বন্ধ হয়ে যায় টিকাকরণ। কাঞ্চনপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকা নিতে আসা রঞ্জিত পাল বলেন, ‘‘প্রথম টিকা নেওয়ার পর নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গিয়েছে। আজ দ্বিতীয় টিকা নেওয়ার জন্য হাসপাতালে এসেছিলাম। এসে দেখি টিকা বন্ধের নোটিশ টাঙানো রয়েছে। এখন কবে আবার টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া শুরু হবে জানি না।’’
বাঁকুড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি ইতিমধ্যেই বিষয়টি রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের নজরে আনা হয়েছে । রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তরফে বাঁকুড়া জেলার জন্য সিরিঞ্জ বরাদ্দও হয়ে গিয়েছে। যতদিন পর্যন্ত বরাদ্দ সেই সিরিঞ্জ বাঁকুড়ায় না আসছে ততদিন মজুত করোনা-সিরিঞ্জ ও অন্যান্য টিকাকরণের কাজে ব্যবহার উপযোগী সিরিঞ্জ ব্যবহার করে ঘাটতি মেটানোর চেষ্টা চলছে।
বাঁকুড়া স্বাস্থ্য জেলার মূখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শ্যামলকুমার সোরেন বলেন, ‘‘বাঁকুড়া স্বাস্থ্য জেলায় কোভিশিল্ড রয়েছে ২৮ হাজার এওবং কোভ্যাক্সিন রয়েছে ৫ হাজার ডোজ। টিকার তুলনায় সিরিঞ্জ মজুত রয়েছে প্রায় ১৪ হাজার কম। এই পরিস্থিতিতে আমরা অন্য টিকার জন্য মজুত সিরিঞ্জ দিয়ে করোনা টিকাকরণ প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখার চেষ্টা করছি। তা সত্বেও সিরিঞ্জের অভাবে কয়েকটি ব্লকে টিকাকরণ ব্যাহত হয়েছে। রাজ্য ইতিমধ্যেই এই জেলার জন্য সিরিঞ্জ বরাদ্দ করেছে। সেই সিরিঞ্জ পৌঁছে গেলেই সমস্যা মিটে যাবে।’’
বাঁকুড়া-২ ব্লকের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবজ্যোতি গোস্বামী বলেন, ‘‘আমাদের হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ৮০০- ১০০০ জনকে টিকা দেওয়া হয়। এখন হাসপাতালে যে সংখ্যক টিকা মজুত রয়েছে তার দশ ভাগের এক ভাগ মাত্র সিরিঞ্জ রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে টিকাকরণ চালিয়ে যাওয়া অসম্ভব। তাই নোটিশ দিয়ে টিকাকরণ আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে।’’