প্রতীকী ছবি।
নিভৃতবাস কেন্দ্রে কিছু শ্রমিকের শারীরিক পরীক্ষা করার পরে নিজেদের পরনের পার্সোনাল প্রোটেকটিভ ইক্যুইপমেন্ট (পিপিই) বিধি মেনে ডিসপোজ়াল না করে রাস্তার ধারে ফেলে দেওয়ায় বিতর্ক থামেনি। রবিবার তারাপীঠের ওই কেন্দ্রে একাংশ শ্রমিককে পরীক্ষা না করেই রামপুরহাট মেডিক্যালের পাঁচ চিকিৎসক চলে যান। তার পরেই এ নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধে। ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (আইএমএ) রামপুরহাট শাখার সম্পাদক দেবব্রত দাস ঘটনার তদন্তের দাবি করেছেন।
চিকিৎসকদের অনেকেরই মত, অত্যন্ত অবিবেচকের কাজ করেছেন রামপুরহাট মেডিক্যল কলেজের ৫ জন চিকিৎসক। চিকিৎসকদের একাংশের মতে, ওই পাঁচ চিকিৎসক কেন এ কাজ করেছেন তা তাঁদের স্পষ্ট করা উচিত। কারণ যা কাণ্ড ঘটেছে তাতে চিকিৎসকদের মাথা নীচু হয়েছে বলে অনেক চিকিৎসক মন্তব্য করেছেন। এখনও ওই চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজের এমএসভিপি সুজয় মিস্ত্রি বলেন, ‘‘পুরো ঘটনা লিখিত ভাবে ডাইরেক্টর অফ মেডিক্যাল এডুকেশনকে রবিবার রাতে মেল করে জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য ভবন যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেবে।’’
চিকিৎসকদের একাংশ আবার পুরো বিষয়টি না জেনে মন্তব্য করতে চাননি। রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজের ওই চিকিৎসকরা মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপ্যালের অধীনে কাজ করেন। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপ্যাল সুজিত দে বলেন, ‘‘ঘটনাস্থলে এমএসভিপি ও ডেপুটি সুপার গিয়েছিলেন। পুরো ঘটনাটি খতিয়ে না দেখে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে শো-কজ বা কোনও আইনি পদক্ষেপ করা এখনই ঠিক হবে না।’’
ওই পাঁচ চিকিৎসকের একজন, মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক, সমীরকুমার সিংহ বলেন, ‘‘আমাদের কাছে নির্দেশ এসেছিল হটস্পট জোন এগরা থেকে ছ’জন শ্রমিক ফিরেছেন। সেই কারণে পিপিই পরে গিয়েছিলাম।’’
তাঁর পাল্টা দাবি, নিভৃতবাস কেন্দ্রে যে সমস্ত শ্রমিকরা ছিলেন তাঁরা কোন কোন ঘরে ছিলেন তা দেখানোর জন্য কোনও নার্সিং স্টাফ বা গ্রুফ ডি স্টাফ উপস্থিত ছিলেন না। কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীরাও কোন ঘরে শ্রমিকরা আছেন তা দেখাতে পারেন নি। এরই মধ্যে ছোট প্যাসেজের মধ্যে পিপিই পরে ভেন্টিলেশনের অসুবিধা হচ্ছিল বলে তাঁর দাবি। তাঁর কথায়, ‘‘অসুবিধা সত্ত্বেও ৬৫ জনের মধ্যে ৫৯ জনের শারীরিক পরীক্ষা করা হয়েছে। বাকি ৬ জনের করা হয়নি।’’
কিন্তু বিধি থাকা সত্ত্বেও পিপিই ফেলে দিয়ে যাওয়া হল কেন? সমীরবাবু বলেন, ‘‘পিপিই ডিসপোজ় করার জায়গা বা হাইড্রোজেন পারক্সাইড সলিউশন মেশানো ডাস্টবিনের ব্যবস্থা ওখানে ছিল না। এছাড়া আমাদের আবার মেডিক্যাল কলেজে ডিউটি করতে হবে, সেই কারণে জায়গা না পেয়ে নিভৃতবাস কেন্দ্রের বাইরে ডাস্টবিনে পিপিই রেখে দেওয়া হয়।’’