কড়া: মাস্ক পরার ব্যাপারে রাস্তায় নেমে সচেতন করছেন পুরুলিয়ার জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার। শুক্রবার রঘুনাথপুরে। ছবি: সঙ্গীত নাগ।
পুরুলিয়ার অন্য ব্লকগুলির সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে রঘুনাথপুর মহকুমাতেও। আদ্রায় ইতিমধ্যেই করোনায় সংক্রামিত হয়েছেন আদ্রা ডিভিশনের ডিআরএম নবীন কুমার। আদ্রা ও পুরশহর রঘুনাথপুরে সংক্রামিত হয়েছেন ১৪ জন। এই পরিস্থিতিতে বাসিন্দাদের সচেতন করতে পথে নামলেন পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন ও পুলিশের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকেরা।
শুক্রবার রঘুনাথপুরে এসে পথচলতি লোকজনদের করোনার স্বাস্থ্যবিধি মানা ও অবশ্যই মাস্ক পরার বিষয়ে সচেতনতা প্রচার করেন পুরুলিয়ার জেলাশাসক অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়, পুলিশ সুপার বিশ্বজিৎ মাহাতো। ওই দলে ছিলেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিলকুমার দত্ত, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পিনাকী দত্ত, রঘুনাথপুরের এসিডিও দিব্যা মুরুগেশন ও এসডিপিও দুর্বার বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ।
এ দিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ রঘুনাথপুরে আসেন তাঁরা। রঘুনাথপুর আদালতের সামনে দাঁড়িয়ে পথচলতি লোকজনকে থামিয়ে সচেতনতার প্রচার করেন অধিকারিকেরা। দেখা যায়, বহু মানুষ মাস্ক ছাড়াই ঘুরে বেড়াচ্ছেন। প্রশাসনের আধিকারিকদের দেখে কেউ কেউ পকেট হাতড়ে রুমাল বের করে মুখ বাঁধেন, কেউ আবার কাঁধে থাকা গামছা দিয়ে মুখ ঢাকেন। তাঁদের হাতে মাস্ক তুলে দিয়ে আধিকারিকেরা বাড়ির বাইরে তা ব্যবহার করতে বলেন। তাঁদের কাছেই রঘুনাথপুর থানা চত্বরে নিয়ে গিয়ে করোনার পরীক্ষা করানো হয়। পরে, পুরুলিয়া থেকে আসানসোলগামী একটি বেসরকারি বাসে উঠেও যাত্রীদের সচেতন করতে দেখা যায় জেলাশাসককে।
রঘুনাথপুর ১ ব্লক স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, এ দিন রঘুনাথপুর থানায় মোট ১৯৪ জনের করোনা পরীক্ষা করা হয়। ব্লকের স্বাস্থ্য কর্মীরা প্রথমে আরটিপিসিআর পরীক্ষা করছিলেন। কিন্তু লোকের সংখ্যা বেশি হওয়ায় ও পরীক্ষার কিট শেষ হয়ে যাওয়ায় বাকিদের র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করানো হয়েছে। ৯৩ জনের র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় সবার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। আরটিপিসিআর পরীক্ষার ফল অবশ্য দিন দু’য়েক পরে জানা যাবে।
প্রশাসন সূত্রের খবর, রঘুনাথপুর মহকুমার ছ’টি ব্লক, আদ্রা ও রঘুনাথপুর পুর-শহর মিলিয়ে ইতিমধ্যেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২০৯ জন। প্রথম দিকে, নিতুড়িয়া ব্লকে করোনায় সংক্রমণের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছিল। সম্প্রতি তা কিছুটা কমেছে। অন্য দিকে, চিন্তা বাড়িয়েছে কাশীপুর ব্লকের সংক্রমণের চিত্র। ইতিমধ্যেই ওই ব্লকে সংক্রমিত হয়েছেন ৬৯ জন। জেলাশাসক অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘করোনার সংক্রমণ রুখতে মাস্ক পরা ও স্বাস্থ্য-বিধি মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি। রঘুনাথপুরে সচেতনতা প্রচারে নেমে সবাইকে এটাই বোঝানো হয়েছে।”
গত বছর করোনার প্রথম ঢেউয়ে আদ্রায় আক্রান্তদের একটা বড় অংশ ছিলেন রেলকর্মী। রেল সূত্রের খবর, এ বারেও রেল-শহরে সংক্রমণ বাড়ছে। সেখানে মোট সাত জন আক্রান্ত হয়েছেন বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। ইতিমধ্যেই আক্রান্ত হয়েছেন আদ্রার ডিআরএম নবীন কুমার ও তাঁর স্ত্রী। আদ্রার এডিআরএম ধনেশ্বর মোহান্ত বলেন, ‘‘ডিআরএম-এর সংস্পর্শে আসা রেলকর্মীদের করোনা পরীক্ষা করানো হয়েছে। তবে সবার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।”