প্রতীকী ছবি
ছেলেমেয়েদের পুজোর পোশাক কিনে দেবেন কী করে ভেবে পাচ্ছেন না পরিযায়ী শ্রমিক থেকে ট্রেনের হকারেরা। কালীপুজোয় সময় পোশাক কিনে দেবেন, এই বলে এঁদের অনেকেই ছোট ছেলেমেয়েদের আশ্বস্ত করেছেন।
ট্রেনে হকারি করেন, এমন অনেকেই জানালেন, ওই ভাবে দিনের শেষে আয় হত তিনশো থেকে চারশো টাকা। অনেকেই এই পেশা ছেড়ে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করার চেষ্টা করেছেন। পারদর্শী না হওয়ায় বাদ পড়েছেন। অনেক দিন রোজগারহীন হয়ে পড়ে সংসার চালানোর তাগিদে এঁদের অনেকে মুরারই রেলগেট সংলগ্ন এলাকায়, বাঁশলৈ বাজার, চাতরা বাজারে ও রাজগ্রামে ট্রেনের মতো ঝালমুড়ি, ঘুগনি, চকলেট বিক্রি করতে শুরু করেছেন। এর ফলে ট্রেনের মতো রোজগার না হলেও দিনের শেষে একশো থেকে দেড়শো টাকা রোজগার হয়। এঁদের বক্তব্য, যে টাকা উপার্জন করেন তাতে অগ্নিমূল্যের বাজারে সংসার চালাবেন নাকি নতুন জামা, প্যান্ট কিনে দেবেন বুঝতে পারছেন না।
অন্য দিকে, পরিযায়ী শ্রমিকদের অনেকে দীর্ঘ দিন লকডাউনে ঘরে বসে সঞ্চয়ের টাকা ভেঙে সংসার চালিয়েছেন। অনেকে আবারও ভিন্ রাজ্যে চলে গিয়েছেন। ট্রেনের হকার রাজু বাগদি বলেন, ‘‘ঝালমুড়ি বিক্রি করে ভাল আয় করতাম। সাত মাস ট্রেন বন্ধ। রেশন সামগ্রীর উপরে নির্ভর করে সংসার চলেছে। ছেলেমেয়েদের বলেছি পারলে কালীপুজোর সময় নতুন জামা কিনে দেব।’’ আর এক হকার সবির শেখ বলেন, ‘‘প্রত্যেক বছর তিন ছেলেকে নিয়ে ঠাকুর দেখতাম। অন্য বাচ্চাদের আবদারের মতো নতুন জামা কিনে দিতে হত। এই বছরও বায়না ধরেছে। দেখি ধার করে হলেও জামা কিনে দিতে হবে।’’
রাজগ্রামের পরিযায়ী শ্রমিক আকাশ মাল। এক মাস আগে মুম্বইয়ে নির্মাণ শ্রমিকের কাজে গিয়েছেন। ফোনে বলেন, ‘‘এ বার অন্য রকম পুজো। নতুন জামা দূরর থাক, বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রাম চালাচ্ছি। প্রত্যেক বছর পুজোর আগে বাড়ি ফিরে সকলের জন্য নতুন কিছু নিয়ে যেতাম। এই বছর লকডাউনের সময়েই বাজারে বাকি হয়েছে। তা শোধ করার জন্য ভিন্ রাজ্যে কাজে এসেছি।’’