জনতার মুখোমুখি। নিজস্ব চিত্র
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ঝালদায় ‘সকলের জন্য বাড়ি’ প্রকল্পে ঘর তৈরির টাকা না পাওয়ার অভিযোগ জমা পড়ল রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের প্রধান সচিব সুব্রত গুপ্তের কাছে। শনিবার ঝালদা পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা প্রাক্তন পুরপ্রধান তৃণমূলের সুরেশ আগরওয়ালের নেতৃত্বে ওই ওয়ার্ডের বেশ কিছু উপভোক্তা পুরুলিয়ায় সার্কিট হাউসে গিয়ে সচিবের কাছে প্রকল্পের পরবর্তী কিস্তির টাকা না মেলার নালিশ জানিয়েছেন। সুব্রতবাবুর আশ্বাস, ‘‘ওঁদের অভিযোগ খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
সুরেশবাবুর অভিযোগ, ‘‘আমার ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের অনেকেই আর্থিক দিক থেকে দুর্বল। দিনমজুরি করে সংসার চালান। অথচ পুরসভা তাঁদের বাড়ি তৈরির টাকা আটকে দিয়েছে! কেউ কেউ প্রথম কিস্তির ৪০ হাজার টাকা পাওয়ার পরে বাকি টাকা আর পাননি। ঘর অসম্পূর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। ভোগান্তির শেষ নেই তাঁদের। প্রাপকেরা সমস্যা সরাসরি প্রধান সচিবকে জানিয়েছেন।’’
সুরেশবাবু যে দলের কাউন্সিলর, সেই তৃণমূলই বর্তমানে পুরবোর্ড চালাচ্ছে। বিরোধীদের সঙ্গে অনাস্থা এনে সুরেশবাবুকে পুরপ্রধানের পদ থেকে সরিয়েছিলেন তাঁর দলেরই কিছু কাউন্সিলর। বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, সেই থেকে প্রাক্তন পুরপ্রধান সুরেশবাবু ও বর্তমান পুরপ্রধান প্রদীপ কর্মকারের সম্পর্ক ‘তিক্ত’। এ দিন যাঁরা নালিশ জানাতে পুরুলিয়ায় গিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে নরেন মাছোয়ার, শ্যামল বাগতি দাবি করেন, ‘‘আমরা মাত্র প্রথম কিস্তির ৪০ হাজার টাকা পেয়েছি। তাতে ঘর সম্পূর্ণ করা যায়নি। বার বার পুরসভায় যাচ্ছি। কিন্তু আমাদের বাকি কিস্তির টাকা দেওয়ার ব্যাপারে পুরসভার কেউ কিছু বলছেন না।’’ তাঁদের আরও দাবি, পুরপ্রধানকে কিছু বলতে গেলে তিনি দাবি করছেন, সুরেশবাবু মামলা করায় সমস্যা হচ্ছে। যদিও সুরেশবাবু তা মানতে চাইছেন না। তাই সমাধানের জন্য প্রধান সচিবের দ্বারস্থ হয়েছেন।
এ দিকে ঘর তৈরির টাকা আটকে রাখার অভিযোগ একেবারেই ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন ঝালদার পুরপ্রধান। তিনি দাবি করেন, ‘‘সব কিছু নিয়ম মেনে হচ্ছে। বিরোধীরা পর্যন্ত কোনও অভিযোগ করেন না। তবে ১০ নম্বর ওয়ার্ডে কিস্তির টাকা বাকি থাকতে পারে। কারণ ওই ওয়ার্ডে যে কী হচ্ছে, তা কাউন্সিলর জানান না। যাঁরা নালিশ তুলছেন, তাঁরা বরং পুরসভায় এসে সমস্যার কথা জানাতে পারেন।’’ যদিও তাঁর বিরুদ্ধে তোলা পুরপ্রধানের অভিযোগ মানতে নারাজ সুরেশবাবু।