বাঁশ দিয়ে রাস্তা আটকে চাঁদা আদায়। রবিবার শান্তিনিকেতনে সুভাষপল্লির রাস্তায়। —নিজস্ব চিত্র।
সামনেই সরস্বতী পুজো। সেই পুজোকে কেন্দ্র করে বোলপুর শান্তিনিকেতন এলাকার বিভিন্ন রাস্তা আটকে চলছে চাঁদা আদায়। যা প্রায় জুলুমের পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে বলে অভিযোগ। টোটো, ভ্যান, মোটরবাইক, বড় গাড়ি, ছোট গাড়ি— ছাড় পাচ্ছে না কেউই। এই নিয়ে ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শুরু করে পর্যটকেরা। বাঁশ দিয়ে রাস্তা আটকাতে নাবালকদের দেখা গেলেও বড়রা তাদের মদত দিচ্ছে বলে অভিযোগ। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে।
প্রতি বছরই সরস্বতী পুজো এলেই চাঁদার জুলুম দেখা যায় বোলপুর-শান্তিনিকেতনের বিভিন্ন জায়গায়। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। কোথাও চাঁদার বই হাতে নিয়ে কিছু যুবক রাস্তার মাঝেই গাড়ি আটকে টাকা আদায় করছে। কোথাও রাস্তার মাঝ বরাবর বাঁশ দিয়ে রাস্তা আগলে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। কোথাও আবার বাঁশের অস্থায়ী ব্যারিকেড দিয়ে চলছে চাঁদা আদায়। এতে যেমন সৃষ্টি হচ্ছে যানজট, তেমন রাস্তায় নাবালকদের বাঁশ দিয়ে পথ আটকানোর জেরে দুর্ঘটনার সম্ভাবনাও রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকদের অভিযোগ, যাঁরা টাকা দিতে অস্বীকার করছেন তাঁদের গাড়ি মাঝরাস্তায় আটকে রেখে চলছে দরাদরি। শেষ পর্যন্ত চাঁদা দিয়েই পার পাচ্ছেন গাড়ির চালক ও সওয়ারিরা। এমন দৃশ্য চোখে পড়ছে শান্তিনিকেতনে রতনপল্লি থেকে তালতোড়, কোপাই, বোলপুর থেকে রাইপুর যাওয়ার রাস্তায়।
চালকদের অভিযোগ, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পরিকল্পিতভাবে নাবালকদের সামনের সারিতে রাখা হচ্ছে। পিছন থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন কিছু যুবক। পুলিশ বা সরকারি বোর্ড লেখা গাড়ি দেখলেই রসিদ বই লুকিয়ে ফেলতেও দেখা যাচ্ছে তাদের। ছাড় দেওয়া হচ্ছে না পর্যটকদের গাড়িগুলিকেও। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে দীর্ঘক্ষণ গাড়ি আটকে হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।
শান্তিনিকেতনে ঘুরতে এসে চাঁদার এমন জুলুম নিয়ে সমাজমাধ্যমেও ভুক্তভোগীদের ক্ষোভ উগরে দিতে দেখা গিয়েছে। কলকাতা থেকে আসা পর্যটক দিশা চট্টোপাধ্যায়, মৌসুমী দাস, সন্দীপ মুখোপাধ্যায়রা বলেন, “আমরা বেড়াতে এসেছিলাম। অথচ আমাদের গাড়ি আটকে জোর করে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। না দিলে চলছে জুলুমবাজি।” রাইপুরের বাসিন্দা অঙ্কুশ দাস বলেন, “চাঁদা মানে আবদার। যখনই সেটা দাবি হয়ে যায় সেটা মেনে নেওয়া মুশকিল, বোলপুরের বিভিন্ন রাস্তায় সেই জিনিস চলছে। অবিলম্বে এবিষয়ে প্রশাসনের দেখা উচিত।”
জেলা পুলিশ সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “এমন কোনও অভিযোগ এখনও পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”