ঝড়ের দাপটে সাময়িক স্বস্তি ফিরলেও মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়েছেন অনেকে। সোমবার বিকেলের ঝড়-বৃষ্টিতে তছনছ হয়ে গিয়েছে হুড়া, পুরুলিয়া ১ ও ২ ব্লক এবং পুরুলিয়া শহরের একাংশ। বাজ পড়ে এক শিশুরও মৃত্যুও হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই শিশুটির নাম নীলকান্ত গড়াই (৫)। বাড়ি জয়পুর থানা এলাকার নারায়ণপুর গ্রামে।
ঝড়ে পুরুলিয়া-বাঁকুড়া (৬০ এ) জাতীয় সড়কের উপর হুড়া থানার কুলগোড়া মোড়ের একটি ধাবার চালা উড়ে যায়। ঝড়ের দাপট এতটাই ছিল যে এই এলাকায় বেশ কয়েকটি গাছ ভেঙে পড়ে। ওই ধাবার মালিক শোয়েব আনসারি বলেন, ‘‘বিকেলের দিকে আকাশ কালো করে ঝড় উঠল। আচমকা সোঁ সোঁ শব্দ করে ঝড় শুরু হল। চোখের সামনে চালাটা কাগজের মতো উড়ে পড়ল।’’ তিনি জানান, তার আগে রাস্তার পাশে বিদ্যুৎবাহী তারের একটি খুঁটি উপড়ে পড়ে। লক্ষণপুর ও লায়েকডি গ্রামেও কিছু ঘরের চালা উড়ে যাওয়ার খবর মিলেছে।
ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে পুরুলিয়া ২ ব্লকের বেশকিছু গ্রামেও। দুমদুমি গ্রামের বাসিন্দা শ্রীকান্ত গড়াই জানান, তাঁদের গ্রামে একটি খাবারের দোকানের উপরে গাছ পড়ে দোকনটি ভেঙে গিয়েছে। মঙ্গলবার ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দারা ব্লক অফিসে যান। তাঁরা ত্রিপল নিতে চাননি। বাসিন্দাদের দাবি, ‘‘আমাদের অনেকের বাড়ির দেওয়াল পড়ে গিয়েছে। ত্রিপল নিয়ে কোথায় চাপাব?’’ পুরুলিয়া ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আনন্দ রাজোয়াড় বলেন, ‘‘ঝড়ে কয়েকটি জায়গায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু বাসিন্দারা এখনই ত্রিপল নিতে চাননি। তাঁদের কী ভাবে সাহায্য করা যায়, ভাবা হচ্ছে।’’ শিশু নীলকান্তর মৃত্যুতে এলাকায় শোক নেমে এসেছে। তার বাবা পশুপতি গড়াই বলেন, ‘‘ছেলে বাড়ির দোতলায় খেলা করছিল। সেই সময় ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে বাজ পড়ে। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু বাঁচানো গেল না।’’