ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘে সিবিআই আধিকারিকরা। নিজস্ব চিত্র।
বীরভূমের বোলপুরের মুলুকে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘে গেলেন সিবিআইয়ের তিন তদন্তকারী আধিকারিক। একটি দানের জমি অনুব্রত মণ্ডল ঘনিষ্ঠ বিদ্যুৎবরণ গায়েনকে বিক্রি করেছিল সঙ্ঘ। তা নিয়ে খোঁজখবর নিতে সিবিআই মঙ্গলবার পৌঁছে যায় ভারত সেবাশ্রমে। কথা সেবাশ্রম সঙ্ঘের মহারাজের সঙ্গেও।
গরু পাচার কাণ্ডের তদন্তে নেমে সিবিআই জানতে পারে, বোলপুর এলাকায় বহু জমি কেনাবেচায় ওই টাকা ব্যবহার হয়েছে। দেখা যায়, ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ একটি জমি বিক্রি করেছে। গত ২১ অক্টোবর সেই সাড়ে চার বিঘা জমি কেনেন অনুব্রত কন্যা সুকন্যা ও কেষ্ট-ঘনিষ্ঠ বিদ্যুতবরণের সংস্থা। দামের ক্ষেত্রে দেখা যায়, যে জমির দাম হতে পারে ১০ কোটি টাকা, তা হস্তান্তর হয়েছে মাত্র ১ কোটি ৬০ হাজার টাকায়! তাতেই তদন্তকারীদের মনে প্রশ্ন জাগে, তা হলে কি সেবাশ্রম সঙ্ঘের উপর চাপ সৃষ্টি করে জমি হস্তান্তর করানো হয়েছিল? কিন্তু বাজারদরের চেয়েও কম দামে কেন? এ বিষয়ে কথা বলতেই মঙ্গলবার সিবিআই স্বামী সঙ্ঘমিত্রানন্দ মহারাজের সঙ্গে দেখা করে। বেশ কিছু নথি নিয়ে ঘণ্টাখানেক পর বেরিয়ে আসেন সিবিআই আধিকারিকরা। সেবাশ্রম সঙ্ঘের পক্ষে শান্তি মহারাজ বলেন, ‘‘সুরুল মৌজার ওই জমিটার ব্যাপারে ওঁরা কিছু তথ্য জানতে চাইছিলেন। আমাদের যা জানানোর জানিয়েছি। ওঁরা খুব খুশি হয়েছেন। অভিযোগ প্রসঙ্গে আমাকে কিছু জিজ্ঞেস করবেন না।’’
গত বছর ২১ অক্টোবর, বোলপুরের সুরুল মৌজায় ভারত সেবাশ্রমের কাছ থেকে অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ বিদ্যুৎ সাড়ে চার বিঘা জমি ১ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা দিয়ে কেনেন। খাতায় কলমে ক্রেতার নাম এএনএম ফুডস প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি। যে সংস্থার ডিরেক্টর সুকন্যা ও বিদ্যুৎ। জমিটির বর্তমান বাজারমূল্য সেই দামের কয়েক গুণ। এ ছাড়া, দানে পাওয়া ওই জমি কেন বিক্রি করল সেবাশ্রম সঙ্ঘ? নাকি অনুব্রতের চাপের কাছে মাথা নুইয়েই দানে পাওয়া জমি জলের দরে বিক্রি করতে বাধ্য করা হয়েছিল?
এই প্রেক্ষিতে সিবিআইয়ের তদন্তকারীদের প্রশ্ন, সুকন্যা এক জন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা এবং বিদ্যুৎ পুরসভা কর্মী। দু’জনেরই স্বল্প বেতন। সে ক্ষেত্রে এই সাড়ে চার বিঘা জমি ১ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা দিয়ে কী ভাবে কেনা হল? তা হলে কি গরু পাচারের টাকায় অনুব্রতই এই জমি কিনেছিলেন?