অনুব্রত ও সুকন্যা মণ্ডল। ফাইল চিত্র।
গরু পাচার মামলায় বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের কন্যা সুকন্যাকে শুক্রবার জিজ্ঞাসাবাদ করলেন সিবিআই আধিকারিকরা। প্রায় ১ ঘণ্টা ১০ মিনিট ধরে সুকন্যাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। অনুব্রত-কন্যার বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। চালকলে সম্পত্তি সংক্রান্ত বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। শুক্রবার দুপুরে বোলপুরে নিচুপট্টিতে তৃণমূল নেতার বাড়িতে যান তদন্তকারীরা।
এর আগে, গত ১৭ অগস্ট অনুব্রত-কন্যাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে এসেও ফিরে যেতে হয়েছিল আধিকারিকদের। সে সময় সুকন্যা জানিয়েছিলেন যে, তাঁর মানসিক অবস্থা ভাল নয়। এ বার তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে সমস্ত রকম আইনি প্রক্রিয়া সেরে যান আধিকারিকরা।
অনুব্রতকে গ্রেফতারের পর একাধিক সম্পত্তির হদিস পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করেছেন তদন্তকারীরা। বীরভূম এলাকায় একাধিক চালকলে হানা দেন তদন্তকারীরা। সেই চালকলগুলির মধ্য অন্যতম ‘ভোলে বোম রাইস মিল’। ওই চালকলের প্রাক্তন মালিক শ্যামল মণ্ডলকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছিল অস্থায়ী ক্যাম্পে। তাঁকেও শুক্রবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। শান্তিনিকেতনে সিবিআই-এর অস্থায়ী শিবিরে গিয়েছেন অনুব্রতের হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারিও।
প্রসঙ্গত, গত ১১ অগস্ট সকালে বোলপুরের নিচুপট্টি এলাকায় অনুব্রতের বাড়িতে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে হানা দিয়েছিল সিবিআই। তার কিছু সময় পরেই গরু পাচার মামলায় তৃণমূলের এই দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতাকে আটক করা হয়। পরে গ্রেফতার হন অনুব্রত। এর পর যত দিন গড়িয়েছে, তৃণমূলের ‘কেষ্ট’-র একাধিক সম্পত্তির হদিস পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন তদন্তকারীরা। যদিও তাঁর কোনও বেনামি সম্পত্তি নেই বলে সংবাদমাধ্যমে দাবি করেছিলেন অনুব্রত।
গরু পাচার-কাণ্ডে অনুব্রত ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৬.৯৭ কোটি টাকার হদিস পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করেছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, হদিস পাওয়া বিপুল পরিমাণ টাকার অঙ্ক বিভিন্ন জেলার একাধিক ব্যাঙ্কে মূলত স্থায়ী আমানত (ফিক্সড ডিপোজিট) হিসাবে রয়েছে। পাশাপাশি কলকাতা ও বীরভূমে অনুব্রতের প্রয়াত স্ত্রী ছবি মণ্ডল ও কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের নামে একাধিক সম্পত্তি সিবিআইয়ের আতশকাচের তলায়। বোলপুরে অনুব্রত-ঘনিষ্ঠদের নামে একাধিক চালকলেরও সন্ধান পেয়েছেন তদন্তকারীরা। এই প্রেক্ষাপটে সুকন্যাকে জিজ্ঞাসাবাদ এই পর্বে নতুন মাত্রা যোগ করল।