গরু পাচারকাণ্ডে অনুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ঠদের জিজ্ঞাসাবাদ সিবিআইয়ের। ফাইল চিত্র।
গরু পাচারকাণ্ডের তদন্তে অনুব্রত মণ্ডলের আপ্ত সহায়ক এবং তাঁর পরিচারককে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করল সিবিআই। বৃহস্পতিবার বীরভূমের বোলপুরে সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পে ডেকে পাঠানো হয় অর্ক দত্ত এবং বিজয় রজককে। গোয়েন্দাদের দাবি, অর্ক আপ্ত সহায়ক এবং বিজয় পরিচারক হিসাবে কাজ করতেন অনুব্রতের। পাশাপাশি, জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বাহিরি পঞ্চায়েতের প্রধান শুভঙ্কর সাধু এবং অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত কাউন্সিলর বিশ্বজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
সিবিআই সূত্রে খবর, ডেকে পাঠানো প্রত্যেকের নামে সমবায় ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট রয়েছে। ওই অ্যাকাউন্টগুলিতে কোটি কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। সেই টাকার উৎস কী, তা জানতেই ওই ৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলে সিবিআইয়ের দাবি। গত মাসে ‘বীরভূম কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্ক’-এর সিউড়ি শাখায় হানা দিয়ে প্রথমে ১৭৭টি ভুয়ো অ্যাকাউন্টের হদিস পান তদন্তকারীরা। ওই অভিযানের পর কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা জানতে পারে যে, ওই ব্যাঙ্কে আরও ভুয়ো অ্যাকাউন্ট রয়েছে। এর পরেই গত বুধবার আবার ওই ব্যাঙ্কে হানা দেয় সিবিআই। আরও ১৫৩টি ভুয়ো অ্যাকাউন্টের হদিস পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করেছেন তদন্তকারীরা। সব মিলিয়ে মোট ৩৩০টি ভুয়ো অ্যাকাউন্টের হদিস পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
তদন্তকারীদের দাবি, গরু পাচারচক্রের কালো টাকা সাদা করতেই সিউড়ির ওই সমবায় ব্যাঙ্কে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট তৈরি করা হয়েছিল। গ্রামবাসীদের নামে ওই অ্যাকাউন্টগুলি রয়েছে। যাঁদের নামে অ্যাকাউন্ট রয়েছে, তাঁরা এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না। এমন অনেকের নামেই অ্যাকাউন্ট রয়েছে, যাঁরা সই-ও করতে পারেন না। এ নিয়ে তদন্তে বৃহস্পতিবার বোলপুরে একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের আধিকারিকদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই।
গরু পাচারকাণ্ডে গত বছরের ১১ অগস্ট গ্রেফতার হন বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত। তৃণমূলের ওই দাপুটে নেতার গ্রেফতারির পর থেকেই একের পর এক তথ্য উঠে এসেছে সিবিআইয়ের হাতে। অনুব্রতের নামে একাধিক সম্পত্তির হদিস পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করেছেন তদন্তকারীরা। এই আবহে সিউড়ির সমবায় ব্যাঙ্কে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট নিয়ে অনুব্রতের ঘনিষ্ঠদের জিজ্ঞাসাবাদ এই পর্বে নতুন মাত্রা যোগ করল।