কলকাতা হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
সাত দিন সময় দিয়ে ঝালদার পুরপ্রধান নির্বাচনের জন্য তিন পুরপ্রতিনিধি সভা ডাকতে পারবেন বলে নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। বৃহস্পতিবার বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা মামলার শুনানি শেষে ওই নির্দেশ দেন।
অনাস্থাকারীদের অন্যতম তৃণমূলের প্রাক্তন পুরপ্রধান সুরেশ আগরওয়াল। তাঁর কথায়, ‘‘আদালতের নির্দেশ মতোই তিন পুরপ্রতিনিধি নতুন পুরপ্রধান নির্বাচনের জন্য সভা ডাকবেন।’’
তৃণমূলের পুরপ্রধান শীলা চট্টোপাধ্যায়কে তলবিসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রেক্ষিতে সরানোর দাবি তোলা বিক্ষুব্ধরা আদালতের এই রায়ে উজ্জীবিত। তাঁদের দাবি, ওই তলবিসভা যে বৈধ ছিল, আদালতের এই নির্দেশে সেটাও পরিষ্কার হয়ে গেল। যদি তলবিসভা অবৈধ বলে আগে দাবি করেছিলেন শীলা।
মামলাকারী কংগ্রেসের পুরপ্রতিনিধি বিপ্লব কয়ালের আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী এ দিন দাবি করেন, নতুন করে পুরপ্রধান নির্বাচনের জন্য সভা ডাকার পাশাপাশি বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছেন, পুরপ্রধান নির্বাচন পর্যন্ত ঝালদা পুরসভার কাজকর্ম মহকুমাশাসক (ঝালদা) দেখাশোনা করবেন। বার বার ফোন করা হলেও মহকুমাশাসক (ঝালদা) রাখি বিশ্বাস ফোন ধরেননি। ফোনে পাঠানো মেসেজের প্রতিক্রিয়াও দেননি।
কংগ্রেস পুরপ্রতিনিধি বিপ্লবের কথায়, ‘‘হাই কোর্ট ইতিবাচক নির্দেশ দিয়েছে।এ বার অচলাবস্থা কেটে নতুন পুরপ্রধানের হাত ধরে ঝালদার কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন হবে।’’ পুরুলিয়া জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতোর দাবি, ‘‘আদালতের এই নির্দেশে বিরোধীদের তলবিসভাও মান্যতা পেল।’’
শীলা এবং পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া দু’জনেই বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশের কপি হাতে এলেই এ নিয়ে মন্তব্য করব।’’
গত বছর ৭ ডিসেম্বর তৃণমূলের পুরপ্রধান শীলা চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে একযোগে অনাস্থা প্রস্তাব আনেন তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ পাঁচ জন ও কংগ্রেসের দুই পুরপ্রতিনিধি। তার প্রেক্ষিতে ১৭ জানুয়ারি তলবিসভা ডাকেন শীলা। কিন্তু বিক্ষুব্ধদের হুইপ দিয়েও বাগে আনতে পারেননি তৃণমূল নেতৃত্ব। শেষে তলবিসভার দিনেই ওই সভা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে নোটিস দেন শীলা। তাতেও দমে না গিয়ে সেই দিনই পূর্ব নির্ধারিত সময়ে পুরভবনে তলবিসভা শেষে পুরপ্রধান পদ থেকে শীলাকে অপসারণ করা হয়েছে বলে দাবি করেন বিক্ষুব্ধ সাত পুরপ্রতিনিধি।
তাঁদের দাবি ছিল, ১২টি আসনের ওই পুরসভায় সাত পুরপ্রতিনিধিই পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ করেছেন। শীলা ওই সভা বৈধ নয় বলে দাবি করেছিলেন। প্রশাসনও প্রতিক্রিয়া না দেওয়ায় তলবিসভার মান্যতা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছিল। পুরসভা সূত্রে খবর, তারপরেই নতুন করে পুরপ্রধান নির্বাচনের জন্য হাই কোর্টের হস্তক্ষেপের ব্যাপারে তোড়জোড় শুরু করেন অনাস্থাকারীরা। বুধবার হাই কোর্ট মামলাটি গ্রহণ করে। এ দিন সেই মামলারই শুনানি হয়।
তবে এরপরে কি ঝালদার জট খুলবে? না কি এই রায়ের বিরুদ্ধে এ বার ডিভিশনবেঞ্চে যাবেন শীলা?