অনুব্রত মণ্ডল। —ফাইল চিত্র।
দলীয় কর্মী খুনের ঘটনায় ১৫ দিনের মধ্যে দোষীদের গ্রেফতার করতে না পারলে ‘ভয়ঙ্কর খেলা’ হবে। পুলিশকে এই ভাষাতেই হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূলের বীরভূম জেলার সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। বুধবার পশ্চিম বর্ধমানের বুদবুদের দেবশালা গ্রামে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন তৃণমূল নেতা চঞ্চল বক্সী। বৃহস্পতিবার চঞ্চলের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন অনুব্রত। বছর চারেক আগে বীরভূমের শিবপুরে জমি আন্দোলনকারীদের গ্রেফতার করতে পুলিশকে যে ভাষায় অনুব্রত ‘নির্দেশ’ দিয়েছিলেন, তার সঙ্গে বৃহস্পতিবারের মন্তব্যের মিল খুঁজে পাচ্ছেন অনেকেই।
বৃহস্পতিবার চঞ্চলের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন অনুব্রত। এর পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ‘‘খুনটা মেনে নেব না। এই পরিবারটিকে আমি ভাল করে চিনি। এদের কোনও শত্রু ছিল না গ্রামে।’’ এর পরই তাঁর হুঙ্কার, ‘‘তৃণমূল চুপচাপ থাকলেও, কেষ্ট মণ্ডল চুপচাপ থাকবে না। আমি মৃত্যুর ভয় পাই না। ১৫ দিনের মধ্যে যদি গ্রেফতার না হয়, তা হলে যে জিনিস করব আমি, ভয়ঙ্কর খেলা খেলে দিয়ে যাব। এটা আমি বলে দিলাম। আমি ছাড়ার লোক নই। এসপি-কে যা বলার বলেছি। কোনও কাহিনি শুনব না। আমি চাই না কোনও অশান্তি হোক। কিন্তু অশান্তি যদি কেউ চায় তা হলে চ্যালেঞ্জ। পুলিশকে প্রমাণ করতে হবে কারা খুন করেছে।’’ অনুব্রত আরও বলেন, ‘‘বিজেপি খুন করতে পারে। আর যদি দলের কেউ হয় তা হলে আগে গুলি করে মেরে দেওয়া উচিত।’’
অনুব্রতর বক্তব্য প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা রমণ শর্মা বলেন, ‘‘আমরা আগে থেকেই বলছি, এই ঘটনার সঙ্গে বিজেপির কোনও যোগ নেই। কারণ তাঁর (চঞ্চল বক্সী) বাবা ঘটনার সময় পিছনে বসে ছিলেন। তিনি সমস্ত বিষয়টি জানেন। তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে বিজেপি-র এর সঙ্গে কোনও যোগ নেই। কারণ তিনি জানেন, কারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত।’’
মঙ্গলবার গেরাই গ্রামে আউশগ্রাম দুই নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি শেখ আবদুল লালনের বাড়িতে অনুষ্ঠান ছিল। ওই অনুষ্ঠানে দলের অন্যান্য কর্মীর সঙ্গে যোগ দিতে গিয়েছিলেন চঞ্চল এবং তাঁর বাবা শ্যামল। বাড়ি ফেরার পথে গেরাই এবং দেবশালার মাঝামাঝি এলাকায় চার-পাঁচ জনের দুষ্কৃতী দল এলোপাথাড়ি গুলি চালায় চঞ্চলকে লক্ষ্য করে। চঞ্চলের শরীরে তিনটি গুলি লাগে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় তাঁর। ওই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত শুরু করেছে সিআইডি।