— প্রতীকী চিত্র।
বিশ্বভারতীকে ঘিরে বাংলার অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটনক্ষেত্র হয়ে উঠেছে বোলপুর এবং সংলগ্ন এলাকা। প্রচুর মানুষ সেখানে জমি কিনে বাড়ি যেমন করছেন, তেমনই ছড়াছড়ি রিসর্ট, অতিথিশালারও। পর্যটনকে হাতিয়ার করেই ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছে লালমাটি। এ বার সেখানেই উঠল শব্দদানবের দৌরাত্ম্যের অভিযোগ। পরিস্থিতি এমনই যে, ক্লাস করাতে পারছেন না শিক্ষকরা, মনঃসংযোগ করতে পারছে না পড়ুয়ারা। গানের গুঁতোয় পড়াশোনা লাটে উঠেছে গোয়ালপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের।
বোলপুর পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের গোয়ালপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়। তার পাশেই তৈরি হয়েছে একটি বেসরকারি রিসর্ট। সেই রিসর্টের গানের গুঁতোয় এখন ‘ছেড়ে দে মা’ অবস্থা গোয়ালপাড়া স্কুলের পড়ুয়া থেকে শিক্ষকদের। স্কুলে এখন একাদশ শ্রেণির পরীক্ষা চলছে। তা ছাড়া পুরোদমে চলছে অন্যান্য ক্লাসও। অভিযোগ, পাশের রিসর্টে এমন তারস্বরে গান বাজানো হয় যে, পড়াশোনাই লাটে উঠেছে স্কুলের। বার বার গান বন্ধ করার আবেদনেও গা করেননি বেসরকারি রিসর্ট কর্তৃপক্ষ, অভিযোগ স্কুলের শিক্ষকদের। বিয়ের মরসুমে শব্দদানবের তাণ্ডব মাত্রাছাড়া আকার নেয় বলেও জানাচ্ছেন শিক্ষক থেকে পড়ুয়ারা। শনিবার স্কুলে গিয়ে দেখা গেল, তারস্বরে গানের আওয়াজ ভেসে আসছে পাশের রিসর্ট থেকে।
স্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী রীতা ঘোষ বলেন, ‘‘আমাদের ফাইনাল পরীক্ষা চলছে। গানের জন্য খুবই অসুবিধা হচ্ছে। ম্যাডাম, স্যরেরা কী বলছেন, প্রথম বেঞ্চে বসেও তা শুনতে পাচ্ছি না। পরীক্ষায় লিখব কী, আওয়াজের জন্য মাথা ঘুরছে। আমাদের অনুরোধ, দয়া করে স্কুল ছুটি হওয়ার পর গান বাজান যত খুশি, কিন্তু স্কুল চলাকালীন নয়।’’
গোয়ালপাড়া স্কুলের শিক্ষক তপোব্রত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘পাশেই একটা হোটেল হয়েছে। স্কুল চলাকালীনই সেখানে সাউন্ড বক্সে গান বাজানো শুরু হয়। শব্দের তাণ্ডবে পাশাপাশি দাঁড়িয়েও কথা বলা যায় না। স্কুল চালানোই মুশকিল হয়ে পড়েছে। একাধিক বার জানানো হয়েছে। কিন্তু তাতে রিসর্ট কর্তৃপক্ষ ভ্রূক্ষেপ করেছেন বলে তো মনে হয় না। রিসর্টের লোকজনকে দেখে শিক্ষিত বলেই তো মনে হয়। গানের জন্য যে এই স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা মাথায় উঠেছে, তা বোঝার মতো বিবেক তাঁদের আছে বলেও মনে হয়। কিন্তু তাঁরা নির্বিকার। তা-ও অনুরোধ করতে চাই। অনুগ্রহ করে স্কুল চলাকালীন যদি ওঁরা শব্দদানবের অত্যাচার বন্ধ রাখেন, আমরা বাধিত হই।’’ এ নিয়ে রিসর্ট কর্তৃপক্ষের কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও পাওয়া যায়নি।