‘ছাত্র সমাজের’ ডাকা নবান্ন অভিযানের সমর্থনে বিজেপির মিছিল দুবরাজপুরে। নিজস্ব চিত্র।
‘ছাত্র সমাজের’ ডাকা আজ, মঙ্গলবারের নবান্ন অভিযানে পিছন থেকে সমর্থনের কথা আগেই জানিয়েছে বিজেপি। সোমবার বিকেলে তারই প্রতিফলন দেখা গেল দুবরাজপুরে। নবান্ন অভিযানের সমর্থনে দলীয় পতাকা ছাড়া শুধু জাতীয় পতাকা নিয়ে এ দিন শহরের পথে একটি মিছিল করে বিজেপি।
মিছিলে পা মেলান দুবরাজপুরের বিজেপি বিধায়ক অনুপ সাহা, দলের বীরভূম সাংগঠনিক জেলার দুই সাধারণ সম্পাদক টুটুন নন্দী ও রীতা ঘোষ, জেলা বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়-সহ অন্য নেতা-কর্মীরা। আর জি কর-কাণ্ডের বিচার, নবান্ন অভিযানে সমর্থন জানানো পোস্টারের পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতেও নানা পোস্টার ছিল। এ দিন পাহাড়েশ্বর কালীমন্দির লাগোয়া বিজেপির দলীয় কার্যালয় থেকে মিছিল থানা মোড়, কামারশাল মোড়, পাকুড়তলা মোড় হয়ে আশ্রম মোড়ে থামে। সেখানে একটি পথসভা করেন বিজেপি নেতা-কর্মীরা। আর জি করের ঘটনার বিচার চেয়ে প্রদীপ জ্বালানো হয়। তবে এই মিছিলেও পোস্টার হাতে অনেক ছোট ছোট ছেলেমেয়েকে দেখা গিয়েছে।
কংগ্রেস বা সিপিএম অবশ্য আগেই ‘ছাত্র সমাজের’ ডাকা এই কর্মসূচিতে দলীয় ভাবে পাশে না-থাকার বার্তা দিয়েছে। তবে, মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে ‘ছাত্র সমাজ’-এর নামে হওয়া মঙ্গলবারের নবান্ন অভিযানকে সফল করতে বিজেপি যথেষ্ট তৎপর। দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার স্পষ্ট করেছেন, নবান্ন অভিযানের কারণেই সে দিন বিজেপি কোনও কর্মসূচি রাখছে না।
আড়ালে বীরভূমের বিজেপি নেতাদের একাংশ বলছেন, ছাত্র সমাজের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আরএসএসের ছাত্র সংগঠন ও দলের যুব সংগঠনের নেতারা যাবেন ওই অভিযানে। নবান্ন অভিযানের সমর্থনেই এ দিন মিছিল হয়েছে দুবরাজপুরে। অন্য দিকে, তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের অভিযোগ, বিজেপি চক্রান্ত করছে নবান্ন অভিযানকে ঘিরে অশান্তি পাকানোর। রবিবার দুবরাজপুরে কারামন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ ও সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী এই নিয়ে বিজেপিকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন। যদিও জেলা থেকে ঠিক কত জন মঙ্গলবার কলকাতা যাবেন, সেটা স্পষ্ট করতে পারেননি বিজেপি নেতারা। তাঁদের দাবি, কয়েকশো যুব ও ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মী কলকাতা যাবেন। কোনও কোনও নেতার আবার দাবি, অন্তত হাজার জনকে কলকাতা পাঠানোর চেষ্টা হচ্ছে। যদিও তা সম্ভব কি না, সংশয় রয়েছে দলেই।
টুটুন নন্দী বলেন, ‘‘যে দাবিতে নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে, তাকে আমরা সমর্থন করছি। কিন্তু, দলের তরফে সংগঠিত ভাবে কিছু করা হচ্ছে না। তাই কত জন কী ভাবে কলকাতা যাবেন, বলা সম্ভব নয়।’’ একই দাবি করেছেন দলের বোলপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডল। জেলা সিপিএম বলছে, আর জি কর-কাণ্ডের বিচার সকলেই চান। কিন্তু, সরকার ফেলার দাবি নিয়ে বিজেপি যা করছে, তার সঙ্গে সিপিএম সহমত নয়।