BJP

BJP: পঞ্চায়েতে প্রার্থী হতে বিভীষণকে প্রস্তাব বিজেপির

নিজেকে ‘অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব’ দাবি করেও এই প্রস্তাব বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছেন বিভীষণ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০২২ ০৬:৩৭
Share:

বিভীষণ হাঁসদার বাড়িতে বিজেপি নেতারা। নিজস্ব চিত্র।

অসুস্থ মেয়ের ওষুধের জোগান দেওয়ার আশ্বাস মিলেছিল বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ ও প্রশাসনের কর্তাদের কাছ থেকে। তবে গত দু’মাসে কোনও তরফেই সাহায্য না মেলায়, ওষুধের টাকা জোগাড় করতে হিমশিম হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ বাঁকুড়ার চতুর্ডিহি গ্রামের বাসিন্দা বিভীষণ হাঁসদার। এই পরিস্থিতিতে, মঙ্গলবার বিভীষণের বাড়িতে গিয়ে তাঁকে পঞ্চায়েত ভোটে দলের প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব দিল বিজেপি। নিজেকে ‘অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব’ দাবি করেও এই প্রস্তাব বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছেন বিভীষণ।

Advertisement

২০২০ সালের নভেম্বরে দলীয় কর্মসূচিতে বাঁকুড়া সফরে এসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বাঁকুড়া ১ ব্লকের চতুর্ডিহি গ্রামে বিভীষণের বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ সারেন। বিভীষণ শাহকে জানান, তাঁর মেয়ে ছোট থেকে মধুমেহ (টাইপ ১ ডায়াবিটিস) রোগে আক্রান্ত। প্রতি মাসে মেয়ের ওষুধের খরচ প্রায় ছ’হাজার টাকা। বিভীষণ ও তাঁর স্ত্রী মণিকা দিনমজুরি করেন। মেয়ের ওষুধ ও চিকিৎসার খরচ তাঁরা সামলে উঠতে পারছেন না। সমস্যার কথা শুনে বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকার রচনার চিকিৎসা ও ওষুধের ব্যবস্থার আশ্বাস দেন। ঘটনার কথা জেনে বিভীষণের বাড়িতে যান বাঁকুড়া ১ ব্লক প্রশাসনের কর্তারাও। তাঁরাও ওষুধের ব্যবস্থার আশ্বাস দেন।

এ দিন বিভীষণ বলেন, ‘‘সাংসদ ও ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের কাছে বিনামূল্যেই মেয়ের ওষুধ পাচ্ছিলাম। কিন্তু গত দু’মাস তা মিলছে না। সাংসদের নার্সিংহোমে গেলে ওই ওষুধ নেই বলে জানানো হচ্ছে। ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও একই কথা বলা হচ্ছে। বাধ্য হয়ে, দোকান থেকে কিনছি। ওষুধের খরচ চালাতে গিয়ে সংসারে টান পড়ছে।’’

Advertisement

মঙ্গলবার সকালে বিজেপির প্রাক্তন বাঁকুড়া জেলা সভাপতি জয়ন্ত মণ্ডল, দলের বাঁকুড়া ১ মণ্ডল সভাপতি বিকাশ ঘোষ বিভীষণের বাড়ি যান। বিভীষণকে পাশে নিয়ে ছবি তোলেন এবং আগামী পঞ্চায়েত ভোটে তাঁকে দলের প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব দেন। বিভীষণ বলেন, “আমাকে পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন বিজেপি নেতারা। তবে আমি কোনও রাজনৈতিক দল করি না। ওঁদের প্রস্তাব বিবেচনা করে জবাব দেব বলে জানিয়েছি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘অসুস্থতার কারণে কিছু দিন আমি কাজ করতে পারিনি। স্ত্রী কোনও মতে দিনমজুরি করে কিছু টাকা আয় করছেন। তার উপরে, মেয়ের ওষুধের খরচ জোগাড়ের চিন্তা। এ সবের পরে, রাজনীতি নিয়ে ভাবার মতো মানসিক অবস্থা এখন আমার নেই।’’

বিজেপি নেতা বিকাশের দাবি, ‘‘আদিবাসী জাতির মহিলা দ্রৌপদী মুর্মুকে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী করা হয়েছে, এটা আমাদের কাছে গর্বের। এ নিয়ে প্রচার করতেই বিভীষণের বাড়ি গিয়েছিলাম। পঞ্চায়েত ভোটে তিনি চাইলে আমাদের প্রার্থী হতে পারেন বলে প্রস্তাব দিয়েছি। তবে মেয়ের ওষুধ নিয়ে সমস্যার কথা তিনি আমাদের জানাননি।’’ সাংসদ সুভাষবাবুর সঙ্গে এ দিন চেষ্টা করেও ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি। বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুনীলরুদ্র মণ্ডলের বক্তব্য, “বিভীষণবাবু প্রতি মাসে সাংসদের নার্সিংহোম থেকে ওষুধ নিয়ে যান বলেই জানি।’’

বাঁকুড়া ১ বিডিও অঞ্জন চৌধুরী বলেন, “বিভীষণবাবুকে নিয়মিত ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে ওষুধ দেওয়া হয়। তার পরেও কেন তিনি ওষুধ না পাওয়ার কথা বলেছেন, খোঁজ নিচ্ছি।’’ বাঁকুড়া ১ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ তথা যুব তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সন্দীপ বাউরির আশ্বাস, “বিভীষণবাবুর মেয়ের ওষুধ সরবরাহ বন্ধ থাকলে, শীঘ্র চালু করার ব্যবস্থা করব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement