জমি-জটে আটকে ছাতনা-মুকুটমণিপুর রেলপথ। —ফাইল চিত্র।
জমি জটে আটকে বাঁকুড়ার প্রস্তাবিত ছাতনা-মুকুটমণিপুর রেলপথ নির্মাণের কাজ। প্রকল্পের দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে রাজ্যকেই দায়ী করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ সরকার। যদিও সুভাষ পাল্টা তৃণমূল শিবিরের তোপের মুখে পড়েছেন।
প্রায় দেড় দশক আগে জমি অধিগ্রহণ করে এই রেলপথ নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল। প্রয়োজনীয় জমির একাংশ অধিগ্রহণ করা হয়েছে। তবে বাকি জমি অধিগ্রহণ আজও হয়নি। সোমবার ওই এলাকা পরিদর্শন করে রাজ্যের বিরুদ্ধেই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ সুভাষ। কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর সুভাষের অভিযোগ, ‘‘জমি অধিগ্রহণের কাজ সম্পূর্ণ না হওয়ার জন্য এই প্রকল্পের কাজ আটকে আছে। কেন্দ্রীয় সরকার এই প্রকল্পকে অর্থ দিয়ে দ্রুত চালু করার জন্য তৈরি। কিন্তু জমি অধিগ্রহণে রাজ্য গড়িমসি করাতেই প্রকল্পের কাজ আটকে রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমার অনুরোধ দ্রুত এই প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণ করে রেলের হাতে তুলে দিন।’’
২০০৫–’০৬ অর্থবর্ষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন ওই রেল প্রকল্পের ঘোষণা করেন। সেই সময় ছাতনার দিক থেকে জমি অধিগ্রহণ করে শুরু হয় রেলপথ তৈরির প্রাথমিক কাজ। দ্রুত গতিতে কাজ এগোতে থাকায় বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ ভেবেছিলেন, অচিরেই সেই রেলপথ দিয়ে ছুটবে ট্রেন। কিন্তু কয়েক বছর যেতে না যেতেই সেই রেলপথ নির্মাণের কাজ থমকে যায়। জানা গিয়েছে, ছাতনা থেকে মুকুটমণিপুর পর্যন্ত ৪৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রেলপথ নির্মাণে প্রয়োজন ৮০০ একরের কিছুটা বেশি জমি। প্রাথমিক ভাবে ৫১৭ একরের সামান্য বেশি জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। সুভাষের অভিযোগের জবাব দিয়েছেন বাঁকুড়ার তালড্যাংরার বিধায়ক অরুপ চক্রবর্তী। তাঁর পাল্টা বক্তব্য, “কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুখে বললে কিছু হবে না। তিনি যা বলছেন সব মিথ্যা কথা। ছাতনা-মুকুটমণিপুর প্রস্তাবিত রেলপথ নির্মাণের কাজ আটকে থাকা আমাদের কাছে লজ্জার। প্রস্তাবিত ওই রেলপথের জন্য ৭৫ শতাংশ জমি অধিগ্রহণ করা হয়ে গিয়েছে। বাকি জমি অধিগ্রহণের জন্য রাজ্যকে টাকা দেয়নি রেল। এমনকি ওই রেলপথের জন্য কেন্দ্রীয় বাজেটে এক পয়সাও বরাদ্দ করেনি। এই অবস্থায় জমি অধিগ্রহণ সম্পূর্ণ হবে কী করে? আমরা দেখতে চাই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এই রেলপথ নির্মাণের জন্য কতটা উদ্যোগী হন।’’