আহত বিজেপি কর্মী। — নিজস্ব চিত্র।
ভোট পরবর্তী অশান্তি অব্যাহত বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে। পাত্রসায়র ও কোতুলপুরের পর এ বার তালড্যাংরা থানার শালতোড়ায় এক বিজেপি কর্মীকে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে মারধরের অভিযোগ। আহত বিজেপি কর্মী অভিজিৎ পাত্রকে প্রথমে আমড্যাংরা সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র, পরে বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বাঁকুড়ার তালড্যাংরা থানার সোনাঝোর গ্রামের বাসিন্দা অভিজিৎ এলাকায় সক্রিয় বিজেপি কর্মী হিসাবে পরিচিত। সদ্য শেষ হওয়া লোকসভা ভোটে শালতোড়ায় বিজেপি লিড পায়। তার পর থেকেই এলাকায় অশান্তি শুরু। অভিযোগ, শনিবার বিকেলে ব্যক্তিগত কাজে বাইক নিয়ে সোনাঝোর গ্রাম থেকে শালতোড়া বাজারে গিয়েছিলেন অভিজিৎ। শালতোড়া বাজারে যাওয়ার পথে শালতোড়া অঞ্চল তৃণমূল কার্যালয়ের সামনে বেশ কয়েক জন তৃণমূল কর্মী অভিজিতের পথ আটকান বলে অভিযোগ। তার পরেই তাঁকে তৃণমূলের পার্টি অফিসে ঢুকিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। তাঁর দাবি, কোনওক্রমে এলাকা ছেড়ে তিনি পালাতে সক্ষম হন।
আহত ওই বিজেপি কর্মীকে উদ্ধার করে প্রথমে আমড্যাংরা সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাঁকে বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়। মারধরের ঘটনায় নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের শালতোড়া অঞ্চল সভাপতি সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে।
আক্রান্ত বিজেপি কর্মী অভিজিৎ বলেন, ‘‘বাইক নিয়ে বাজারে যাওয়ার পথে শালতোড়ায় তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ের সামনে আমার বাইক থামায় তৃণমূল কর্মীরা। পরে সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে দলীয় কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে আমাকে চড়, থাপ্পড় মারা হয়। লাঠি ও রড দিয়েও মারার চেষ্টা হয়েছিল। কোনও রকমে পালিয়ে প্রাণে বেঁচেছি।’’
বিজেপির বিষ্ণুপুর ৩ নম্বর গ্রামীণ মণ্ডলের সভাপতি দিব্যেন্দু ঘোষ বলেন, ‘‘নির্বাচনে বিষ্ণুপুর লোকসভায় বিজেপি জয়ী হওয়ায় লাগাতার সন্ত্রাস চালাচ্ছে তৃনমূল। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।’’ ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন অভিযুক্ত অঞ্চল সভাপতি সুশান্ত। তিনি বলেন, ‘‘অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন। যে সময়ের কথা বলা হচ্ছে সেই সময় আমি এলাকাতেই ছিলাম না। দলীয় কার্যালয়ও খোলা ছিল না।’’ তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি নিতাই চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ঘটনার কথা আমার জানা নেই। মারধরের সংস্কৃতিতে তৃণমূল কোনও দিনই বিশ্বাসী নয়। যদি কিছু হয়ে থাকে তা হলে ব্লক সভাপতির কাছ থেকে পুরো ঘটনা জেনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’