শিয়ালদহের পাঁচ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে ছাড়ছে শান্তিপুর লোকাল। — নিজস্ব চিত্র।
শিয়ালদহের পাঁচ নম্বর প্ল্যাটফর্মে রবিবার দুপুরে প্রথম বার প্রবেশ করল ১২ কামরার শান্তিপুর-শিয়ালদহ লোকাল ট্রেন। তার পর তা শান্তিপুরের উদ্দেশে রওনা দিল। পরীক্ষামূলক ভাবে চালানো হল ১২ কামরার ওই ট্রেন। শিয়ালদহ মেন এবং উত্তর শাখায় জুলাই মাস থেকে ১২ কামরার ট্রেন চলাচল শুরু হবে। সেই কারণে শিয়ালদহ স্টেশনের এক থেকে পাঁচ নম্বর প্ল্যাটফর্মে চলছিল সম্প্রসারণের কাজ। তার জেরেই গত শুক্রবার থেকে বিঘ্নিত হয় রেল পরিষেবা। বিপাকে পড়েন যাত্রীরা।
রবিবার দুপুর ১টা ১৮ মিনিট নাগাদ শিয়ালদহের পাঁচ নম্বর প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করে শান্তিপুর-শিয়ালদহ লোকাল। এর পর দুপুর ১টা ৪২ মিনিট নাগাদ এক নম্বর প্ল্যাটফর্মে আরও একটি লোকাল ট্রেন প্রবেশ করে।
রবিবার সকালেই পূর্ব রেলের তরফে জানানো হয়েছে, শিয়ালদহের এক থেকে পাঁচ নম্বর প্ল্যাটফর্ম সম্প্রসারণের কাজ শেষ হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের আগে। কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল দুপুর ২টোয়। রেলের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, সম্প্রসারণের জন্য গত শুক্রবার থেকে রবিবার দুপুর ২টো পর্যন্ত শিয়ালদহ স্টেশনের এক নম্বর থেকে পাঁচ নম্বর প্ল্যাটফর্ম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। নির্দিষ্ট সময়ের দু’ঘণ্টা আগেই কাজ শেষ হয়েছে। রবিবার দুপুর ১২টা থেকে শিয়ালদহ মেন শাখায় এক থেকে পাঁচ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ট্রেন পরিষেবা চালু হয়েছে। তবে কোনও কোনও ট্রেন কিছুটা দেরিতে চলার সম্ভাবনা রয়েছে। পূর্ব রেলের ডিআরএম (ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার) দীপক নিগম জানিয়েছেন, ইন্টারলকিংয়ের কাজ হয়ে গিয়েছে। সিগন্যালের কাজও শেষ হয়েছে। জুলাই মাস থেকে ১২ কামরার ট্রেন পরিষেবা চালু হবে শিয়ালদহ মেন এবং উত্তর শাখায়। মনে করা হচ্ছে, তখন ওই শাখার ট্রেনগুলিতে ভিড় কমবে।
এই প্ল্যাটফর্ম সম্প্রসারণের কাজের কারণে শুক্রবার থেকে চরম ভোগান্তি হয় নিত্যযাত্রীদের। শনিবার বৃদ্ধি পায় ভোগান্তি। বাতিল হয় একের পর এক ট্রেন। যে ক’টি ট্রেন চলে, তা-ও দেরিতে পৌঁছয় গন্তব্যে। সঠিক সময়ে স্কুল, কলেজ, অফিসে পৌঁছতে পারেননি নিত্যযাত্রীরা। ট্রেনে ছিল উপচে পড়া ভিড়। স্টেশনে তৈরি হয় বিশৃঙ্খলা। এই পরিস্থিতিতে ভিড়ের চাপে শুক্রবার ট্রেন থেকে পড়ে যান ২২ বছরের এক যুবক। শিয়ালদহ মেন শাখায় টিটাগড় এবং খড়দহ স্টেশনের মাঝে ঘটে এই দুর্ঘটনা। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে বিএন বসু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। মৃত ওই যুবকের নাম মহম্মদ আলি হাসান আনসারি। তিনি টিটাগড়ের বাসিন্দা। এই নিয়ে রেলের দিকে আঙুল তোলেন সাধারণ যাত্রীরা। রবিবার সকালে শিয়ালদহ স্টেশনে বিক্ষোভ দেখান যাত্রীরা। অবশেষে রবিবার দুপুরে রেলের তরফে দাবি করা হয়, প্ল্যাটফর্ম সম্প্রসারণের কাজ শেষ হয়েছে। তবে ট্রেনগুলি দেরিতে চলার সম্ভাবনা রয়েছে।