বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ওয়ার্ডের অবস্থা। নিজস্ব চিত্র
ফের সাফাই কর্মীদের কর্মবিরতির জেরে বিপত্তি বিষ্ণুপুর সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে। শৌচাগারের নোংরা জল ওয়ার্ডে ঢুকে পড়ায় শয্যার অভাবে মেঝেতে শুয়ে থাকা রোগী ও রোগীর বিছানা ভিজে যায় বলে অভিযোগ। শুক্রবার রাতে হাসপাতালের এক তলা ও পাঁচ তলার ওয়ার্ডের ওই ঘটনার জেরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন রোগীর পরিজনেরা। খবর পেয়ে হাসপাতালে যান বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। তাঁদের বিক্ষোভের জেরে সাফাইয়ে নামেন অস্থায়ী কর্মীরা। হাসপাতালের সুপার শুভঙ্কর কয়াল বলেন, “শুক্রবার হাসপাতালের সংস্থার অধীনে থাকা সাফাইকর্মীরা ফের কর্মবিরতিতে শামিল হন। তার জেরে অসুবিধায় পড়তে হয়েছিল। রাতে তাঁদের সঙ্গে আলোচনার পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।”
সংস্থার অধীনে থাকা ইনচার্জ শিবম লাহা। তাঁর দাবি, “হাসপাতালের পাইপলাইনে সমস্যা হয়েছিল। সেই কারণে জল উপচে ওয়ার্ডে ঢুকে পড়ে। সাফাই নিয়ে কোনও সমস্যা নেই হাসপাতালে।”
হাসপাতালের মেঝেয় বৃদ্ধ বাবাকে ওই অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন এক রোগীর পরিজন। তাঁর অভিযোগ, “চার ঘণ্টা ধরে ওয়ার্ডে শৌচালয়ের নোংরা জল ঢুকে রইল। রোগীরা ভিজে গেল। অথচ কারও দেখা নেই। কেউ এ বিষয়ে গুরুত্ব দেননি। এমন পরিষেবা পেলে রোগীদের কী ভাবে হাসপাতালে আনার কথা ভাবা যায়।” বিষ্ণুপুরের বাসিন্দা, স্বপন সরকার নামে আরও এক রোগীর পরিজনের প্রশ্ন, “ওয়ার্ডে গিয়ে দেখি, শৌচালয়ের জল ওয়ার্ডে জমে রয়েছে। প্রায় ৪ ইঞ্জি জলে ভিজছে রোগীর বিছানা, খাবার, জলের বোতল থেকে সব কিছু। কর্মীদের নিজেদের ঝামেলার শিকার কেন রোগীদের হতে হবে?” রোগী নিয়ে বাঁকুড়া চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান তিনি।
বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি নীরজ কুমার অভিযোগ, “স্বাস্থ্যকর্মী নয়, হাসপাতালে তৃণমূলের নেতাদের নিয়োগ করা হয়েছে। রোগীরা নোংরা জলে ভাসছে আর হাসপাতালে নিযুক্ত সংস্থার কর্মীরা উদাসীন। কেন বিকল্প ব্যবস্থা নিতে পারলেন না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রোগীদের জীবন নিয়ে তামাশা করা বন্ধ হোক।”
রোগীদের পরিজনদেরও একাংশের প্রশ্ন, নিজেদের খেয়ালখুশি মতো কি কর্মীরা এ ভাবে কাজ বন্ধ করে দিতে পারেন। বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য-জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বিজয়প্রসাদ মুখোপাধ্যায় বলেন, “এটা অবশ্যই কাম্য নয়। তবে সংস্থার টেন্ডার আমাদের এখান থেকে হয় না। তা হয় ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল সার্ভিস কর্পোরেশন’ থেকে। বারবার কেন এমন হচ্ছে, তা নিয়ে সুপারের কাছে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট চেয়েছি। তা স্বাস্থ্যভবনে পাঠানোর সঙ্গে মেডিক্যাল সার্ভিস কর্পোরেশনকে জানানো হবে। রোগীকল্যাণ সমিতির সভায় এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে।”