প্রতীকী ছবি।
গত কয়েকদিনে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় শিশুদের জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। বীরভূম জেলার স্বাস্থ্য দফতরও বিষয়টি নিয়ে সতর্ক।
প্রশাসন সূত্রে খবর, জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা শিশুদের জ্বর নিয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছেন। জেলার বিভিন্ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন শিশুদের রোগের বিষয়ে তথ্য নেওয়া হচ্ছে। বুধবার জেলার দুই স্বাস্থ্য জেলার আধিকারিকদের সঙ্গে শিশুদের জ্বর নিয়ে ভিডিয়ো কনফারেন্সে স্বাস্থ্য ভবন থেকে রাজ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা-সহ বি সি রায় শিশু হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা ছিলেন। রাজ্যের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের এমএসভিপি ও রাজ্যের বিভিন্ন স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকরাও ছিলেন।
বৈঠকে রামপুরহাট এবং বীরভূম দুই স্বাস্থ্য জেলার আধিকারিকেরাই জানিয়েছেন জেলায় এই মুহূর্তে জ্বরে আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে ভয়ের কিছু নেই। দুই স্বাস্থ্য জেলাতেই কোনও এলাকা থেকে একসঙ্গে দশ জন শিশু জ্বরে ভুগছে বা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন আছে, এ রকম কোনও খবর নেই বলে স্বাস্থ্য আধিকারিকরা জানিয়েছেন। রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান বলেন, ‘‘মঙ্গলবার রামপুরহাট মহকুমাশাসক স্বাস্থ্য জেলায় নিমোকক্কাল প্রতিষেধক দেওয়ার প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করেন। ওই প্রশিক্ষণে স্বাস্থ্য জেলার অধীন বিভিন্ন ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিকদের শিশুদের জ্বর নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে।’’ বীরভূম স্বাস্থ্য জেলার উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মৃণালকান্তি ঘোষ বলেন, ‘‘শিশুদের জ্বর নিয়ে মঙ্গলবার জেলা প্রশাসনিক স্তরে বৈঠক হয়েছে। প্রতিনিয়ত জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে শিশুদের জ্বর নিয়ে তথ্য সরবরাহ করা হচ্ছে।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে বর্তমানে বেশিরভাগ শিশুদের জ্বর, সর্দি-কাশি হচ্ছে। ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস থেকে মূলত তা হচ্ছে বলে জানান চিকিৎসকেরা। যে পরিবারে বড়রা জ্বরে ভুগছেন সেই পরিবারে দু’বছরের নীচে শিশুদের আলাদা করে রাখার ব্যাপারে স্বাস্থ্য আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা জানান। কোনও এলাকায় যদি দশ জন শিশু জ্বরে ভোগে সেই এলাকা থেকে জ্বরে আক্রান্ত শিশুদের নাক এবং মুখের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে নাইসেডে পাঠানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। কোন কোন শিশুদের ক্ষেত্রে হাই ফ্লো অক্সিজেন সরবরাহ করা হবে সেই নির্দেশও দেন স্বাস্থ্যকর্তারা।
স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা জানান, বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে শিশুদের জন্য আলাদা মাস্ক সরবরাহ করা হবে এবং পালস অক্সিমিটার সরবরাহ করা হবে। বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে ইনফ্লুয়েঞ্জা পরীক্ষা করার নমুনা পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বীরভূম জেলার ক্ষেত্রে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ইনফ্লুয়েঞ্জা পরীক্ষা করার নমুনা পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এমএসভিপি পলাশ দাস বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য আধিকারিকদের নির্দেশ মতো শিশুদের চিকিৎসার জন্য মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রস্তুতি চলছে। প্রাথমিক ভাবে জ্বরে আক্রান্ত শিশুদের জন্য ডেঙ্গি এবং ম্যালেরিয়া পরীক্ষা করা হয়। পাশাপাশি করোনা সন্দেহেও পরীক্ষা করা হয়। তবে এখনও পর্যন্ত কোনও এলাকা থেকে একসঙ্গে দশ জনের বেশি শিশু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে এ রকম কোনও খবর নেই।’’