ইতিউতি জটলা, কড়া পদক্ষেপ
lockdown

‘লকডাউন’ যেন ‘বন্‌ধ’

চলতি সপ্তাহের লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে নিয়মভঙ্গে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সরাসরি আইনি পদক্ষেপের পথেও হাঁটল বাঁকুড়া জেলা পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২০ ০৩:৩৪
Share:

বিষ্ণুপুরের বোলতলা। ছবি: শুভ্র

লাঠি উঁচিয়ে পথে বেরনো মানুষকে ঘরমুখী করতে পুলিশের দৌড়োদৌড়ি চলেছে। পাশাপাশি, চলতি সপ্তাহের লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে নিয়মভঙ্গে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সরাসরি আইনি পদক্ষেপের পথেও হাঁটল বাঁকুড়া জেলা পুলিশ। সন্ধ্যায় জেলা পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও বলেন, “লকডাউনে সরকারি নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগে ২৪৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরে তাদের জামিন দেওয়া হয়। প্রত্যেকের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা হয়েছে। লকডাউন সফল করতে পুলিশ আগামী দিনেও কড়া ব্যবস্থা নেবে।”
পুলিশ সূত্রে খবর, নিয়ম ‘ভাঙা’র ঘটনা বেশি চোখে পড়েছে বিষ্ণুপুর মহকুমায়। এসডিপিও (বিষ্ণুপুর) প্রিয়ব্রত বক্সী বলেন, ‘‘দুপুর পর্যন্ত ১১৪ জনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশি টহল চলছে।’’ এসডিপিও (খাতড়া) বিবেক বর্মা জানান, এ দিন দুপুর পর্যন্ত খাতড়া মহকুমার বিভিন্ন ব্লকে ৬০ জনের বিরুদ্ধে লকডাউনের বিধি না মানায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বাঁকুড়া সদর থানায় এ দিন বিকেল পর্যন্ত ন’জনকে আটক করা হয়েছে লকডাউনের নিষেধাজ্ঞা না মানার অভিযোগে। অন্য দিকে, পাত্রসায়র থানায় ১৫ জন, ওন্দা এবং গঙ্গাজলঘাটি থানায় ১০ জন ও মেজিয়া থানায় তিন জনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ইন্দাস থানাও এ দিন বিকেল পর্যন্ত ১০ জনকে আটক করেছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, লকডাউনে নিয়মভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মীকে কাজে সহায়তা না করা (ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৮৭ নম্বর ধারা) ও সজ্ঞানে ‘কোয়রান্টিন’ আইন লঙ্ঘনের (ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৭১ নম্বর ধারা) অভিযোগে মামলা করা হচ্ছে। আইনজীবীদের সূত্রে জানা যায়, দোষ প্রমাণিত হলে ১৮৭ ধারায় ন্যূনতম এক মাস জেল ও আর্থিক জরিমানা অথবা দু’টির যে কোনও একটি শাস্তি হতে পারে। আর ২৭১ ধারায় ন্যূনতম ছ’মাস জেল বা আর্থিক জরিমানা বা দু’টির মধ্যে যে কোনও একটি সাজা হতে পারে।
তবে পুলিশি টহল ও আইনি ব্যবস্থা সত্ত্বেও জটলার চেনা ছবি কম-বেশি দেখা গিয়েছে। বৃহস্পতিবারের লকডাউনে বাঁকুড়া শহরের দোলতলা এলাকায় স্থানীয়দের একাংশের জটলা দেখে লাঠি নিয়ে তেড়ে গিয়েছিল পুলিশ। দুপুরে শহরের আশ্রমপাড়া এলাকার গাছের তলায় বহু মানুষকে এক সঙ্গে আড্ডা দিতে দেখা যায়।
বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ, পেশায় চিকিৎসক সুভাষ সরকার আবার লকডাউনের পদ্ধতি নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, “এক দিনের লকডাউন। আর তার পর দিনই আবার বাজারে কেনাকাটার হুড়োহুড়ি। রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্ত আদৌ বৈজ্ঞানিক কি না, সেটাই প্রশ্ন।’’ রাজ্যের মন্ত্রী তথা জেলা তৃণমূল সভাপতি শ্যামল সাঁতরার অবশ্য বক্তব্য, “সমস্ত স্তরের মানুষের চেষ্টায় এক দিনের লকডাউনও সফল হলে করোনাভাইরাসের শৃঙ্খলা ভেঙে গিয়ে মোকাবিলা সহজ হবে।”

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement