—প্রতীকী ছবি।
ফ্ল্যাটের তালা ভেঙে চুরি! বাঁকুড়ার কেরানিবাঁধ এলাকায় একটি আবাসনের ওই ঘটনার তদন্তে নেমে পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাট থানার মেচেদা থেকে এক যুবককে ধরেছে পুলিশ। তাঁকে জেরা করে হতভম্ব বাঁকুড়া সদর থানার তদন্তকারীরা। ধৃত চোর ইংরেজিতে এমএ পাশ! শুধু তা-ই নয়, আইনের ডিগ্রিও রয়েছে তাঁর। পুলিশ সূত্রে খবর, আদালতের নির্দেশে চার দিনের পুলিশি হেফাজত হয়েছে ধৃতের।
গত ৩ জানুয়ারি বাঁকুড়ার কেরানিবাঁধ এলাকার এক শিক্ষিকার আবাসনের তালা ভেঙে সর্বস্ব চুরির অভিযোগ ওঠে। শিক্ষিকার অভিযোগ, নগদ টাকা-সহ অলঙ্কার ও অন্যান্য জিনিসপত্র চুরি গিয়েছে। আবাসনের সিসি ক্যামেরার ছবি দেখে এক যুবককে শনাক্ত করে পুলিশ। এর পর সিসি ক্যামেরার ছবি ও অন্যান্য সূত্রের খবরকে কাজে লাগিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পূর্ব মেদিনীপুরের মেচেদায় হানা দেয় বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশ। এই চুরির ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে মেচেদা বাসস্ট্যান্ড থেকে গ্রেফতার করা হয় সৌমাল্য চৌধুরী নামে বছর পঁয়ত্রিশের এক যুবককে। গ্রেফতারের পর ধৃতকে বাঁকুড়া সদর থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই তার শিক্ষাগত যোগ্যতার কথা শুনে হতবাক হয়ে যান তদন্তকারীরা। সূত্রের খবর, ধৃত সৌমাল্যের বাবা সরকারি কর্মচারী ছিলেন। প্রয়াত মা ছিলেন স্কুলের শিক্ষিকা। হুগলি জেলায় বাড়ি হলেও বাবা-মায়ের কর্মসূত্রে ছোট থেকেই সৌমাল্য থাকতেন আসানসোলে। তাঁর পড়াশোনাও সেখানে। তদন্তকারীদের দাবি, লেখাপড়ায় খুব একটা খারাপ ছিলেন না সৌমাল্য। পড়াশোনা শেষে সৌমাল্য রেলে চাকরিও পান। রেলে কয়েক বছর খড়্গপুর ও অল্প দিন আদ্রা ডিভিশনে চাকরিও করেন। কিন্তু এই সময়ে তাঁর মানসিক সমস্যা দেখা দেওয়ায় চিকিৎসার জন্য চাকরি ছেড়ে দিতে হয়। চাকরি ছাড়ার পর এক বন্ধুর সৌজন্যে চুরিবিদ্যায় আসক্ত হয়ে পড়েন সৌমাল্য। তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকদের ধারণা, সৌমাল্য ‘ক্লেপটোম্যানিয়া’ নামের একটি মানসিক রোগের শিকার।
বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বৈভব তেওয়ারি বলেন, ‘‘বাড়িতে তেমন অর্থসঙ্কট ছিল না। কিন্তু চুরি করা সৌমাল্যের কাছে কার্যত অভ্যাসে পরিণত হয়েছিল। সুযোগ পেলেই সে চুরি করত। এর আগে বিভিন্ন জায়গায় তার বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ রয়েছে। বেশ কয়েক বার গ্রেফতারও হয়েছে। আমরা সব দিক খতিয়ে দেখছি। এই চুরির ঘটনায় ধৃতের সঙ্গে আর কেউ যুক্ত ছিল কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’