উদ্ধার হওয়া সিম কার্ড এবং অন্যান্য সরঞ্জাম। নিজস্ব চিত্র।
বাঁকুড়ায় ই ওয়ালেট-কাণ্ডে একই ধরনের নতুন একটি চক্রের সন্ধান পেল পুলিশ। বাঁকুড়ার ছাতনা থানার খড়বোনা এলাকায় অভিযান চালিয়ে নতুন এই চক্রের পাণ্ডা-সহ মোট দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। উদ্ধার হয়েছে মোট ৫ হাজার ৭০০টি সক্রিয় সিম কার্ড, বহু ভুয়ো আধার কার্ড এবং কিউআর কোড। ওই কোড কী কাজে ব্যবহার করা হত, তা জানতে ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা।
গত ১০ অগস্ট বাঁকুড়ার ধোবারগ্রাম থেকে অভিষেক মণ্ডল নামে এক যুবককে গ্রেফতারের পর ই ওয়ালেট জালিয়াতির পর্দা ফাঁস হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রকাশ্যে আসছে চাঞ্চল্যকর নানা তথ্য। এ নিয়ে সতর্ক করা হয় প্রতিটি থানাকে। এর পরই খোঁজ মেলে খড়বোনা এলাকার বাসিন্দা সব্যসাচী কুন্ডু নামে এক যুবকের। তার বাড়িতে হানা দিয়ে দেখা যায়, ভুয়ো নথির ভিত্তিতে হাজার হাজার সিম কার্ড নিয়ে একই ধাঁচে প্রতারণার কারবার ফেঁদে বসেছে ওই যুবক। সব্যসাচীর বাড়ি থেকে কম্পিউটার এবং বহু ভুয়ো নথি উদ্ধার হয়েছে। মিলেছে হাজার তিনেক সিম কার্ড। সব্যসাচীকে জেরা করে বাপি গড়াই নামে বাঁকুড়ারই গঙ্গাজলঘাঁটি থানার এক যুবকের সন্ধান পায় পুলিশ। পুলিশের দাবি, পেশায় একটি মোবাইল সংস্থার ডিলার বাপি ভুয়ো নথির ভিত্তিতে সিম কার্ড সক্রিয় করে তা পাঠিয়ে দিত সব্যসাচীর কাছে। পুলিশ বাপিকে গ্রেফতার করেছে। বাপির বাড়ি থেকেও ২ হাজার ৭০০ সিম, আধার কার্ড-সহ বিভিন্ন ভুয়ো নথি এবং বেশ কিছু কিউআর কোড পাওয়া গিয়েছে।
ধরা পড়া দু’টি চক্র পৃথক ভাবেই কাজ করত বলে মনে করছে পুলিশ। সেই তদন্তে নতুন মাত্রা যোগ করেছে উদ্ধার হওয়া কিউআর কোডগুলি। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার বলেন, “বাঁকুড়ার ধোবারগ্রামের অভিষেক মণ্ডলের চক্রের মতোই ছাতনার এই চক্রও ওয়ালেট তৈরি করে টেলিগ্রামের সাহায্যে যোগাযোগ রেখে বিভিন্ন রাজ্যের প্রতারক গোষ্ঠীকে সরবরাহ করত। ছাতনার ই ওয়ালেট চক্রটির কাছ থেকে বেশ কিছু কিউ আর কোড আমরা পেয়েছি। সেগুলি কী কাজে ব্যবহার করা হত আমরা তা খতিয়ে দেখছি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে আমাদের ধারণা, ই ওয়ালেট অ্যাকাউন্ট বিক্রির টাকা কিউআর কোডের মাধ্যমেই লেনদেন করত ছাতনার চক্রটি। এই একই ধরনের আর কোনও চক্র রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’