মহকুমাশাসকের অফিসে মেলা কমিটির বৈঠক। নিজস্ব চিত্র
করোনা-আবহে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর মেলা করা নিয়ে সংশয় আগেই কেটেছে। বৃহস্পতিবার মেলা কমিটি বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিল, কমানো হচ্ছে বাজেট। আকর্ষণ কমানো হচ্ছে না।
মেলা কমিটির তরফে জানানো হয়েছে, সদ্য প্রয়াত অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের স্মরণে একটি আর্ট গ্যালারি মেলায় থাকবে। সৌমিত্রবাবুর অভিনয় জীবনের বিভিন্ন সময়ের ছবি ও তাঁর কৃতিত্বের কথা দিয়ে ওই গ্যালারি সাজানো হবে। চলতি বছরেই বিষ্ণুপুর হারিয়েছে তার ভূমিপুত্র তথা পুরাতত্ত্ব গবেষক চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্তকে। তাঁর নামে এ বার মেলায় একটি বিশেষ মঞ্চ থাকবে। সেখানে কুসংস্কার ও করোনা প্রতিরোধ করা-সহ নানা বিষয়ে আলোচনাসভা হবে। ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ নিয়ে সচেতনতার বার্তাও দেওয়া হবে ওই মঞ্চ থেকে।
বিষ্ণুপুরের পর্যটন শিল্প এবং জেলার হস্ত শিল্পের প্রসারের উদ্দেশ্যে ২৩-২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিষ্ণুপুর মেলা চলে। এ বার মেলার বয়স ৩৩ বছর। বরাবরের মতো এ বারও প্রচুর স্টল থাকবে মেলায়। থাকবে নানা সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য দু’টি মূল মঞ্চ— ‘যদুভট্ট মঞ্চ’ ও ‘রামানন্দ মঞ্চ’।
বৈঠকের পরে, মেলা কমিটির সচিব তথা এসডিও (বিষ্ণুপুর) অনুপকুমার দত্ত বলেন, ‘‘এ বার মেলার বাজেট ৬৫ লক্ষ টাকা থেকে কমিয়ে ২৫ লক্ষ টাকা করা হচ্ছে। বিভিন্ন সরকারি দফতরের কাছে অনুদান চাওয়া হবে বলে মেলা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’ তিনি জানান, মেলার মঞ্চে অনুষ্ঠান করার জন্য শিল্পীরা তাঁদের আবেদন ই-মেল করতে পারবেন bishnupurmela2020@gmail.com-তে। আবেদনের সময়সীমা ৫-১২ ডিসেম্বর। অডিশন নেওয়া হবে ১৪-১৭ ডিসেম্বর। কলকাতা থেকে বিশিষ্ট শিল্পী নির্বাচনের জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে রাজ্য তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের ডিরেক্টরকে। এসডিও জানান, মেলায় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের মোট ১০০টি স্টল থাকছে। সেখানে কুটির শিল্প, তাঁত ও বস্ত্র শিল্প এবং সরকারি বিভিন্ন দফতরের
স্টল থাকবে।
এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মেলা কমিটির চেয়ারম্যান তথা বাঁকুড়া জেলা সভাধিপতি মৃত্যুঞ্জয় মুর্মু, সহকারী সভাধিপতি শুভাশিস বটব্যাল, বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তুষারকান্তি ভট্টাচার্য, বিষ্ণুপুরের পুর-প্রশাসক দিব্যেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক অরুণাভ মিত্র, বিষ্ণুপুর মহকুমা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক রামশঙ্কর মণ্ডল, এসডিপিও (বিষ্ণুপুর) প্রিয়ব্রত বক্সী প্রমুখ। জানানো হয়েছে, ২৩ ডিসেম্বর মেলা উদ্বোধনের আগে স্বাস্থ্য-বিধি মেনে বিষ্ণুপুর স্টেডিয়াম থেকে একটি র্যালি বেরোবে। শহর পরিক্রমা করে পৌঁছবে মেলা প্রাঙ্গণে। তার পরেই সূচনা হবে ৩৩তম বিষ্ণুপুর মেলার।