তারাপীঠ মন্দিরে বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র।
নেতা চলে গেলে সমস্যা নেই, কর্মীরা থাকলেই হবে বলে জানিয়ে দিলেন বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। বৃহস্পতিবার তারাপীঠ মন্দিরে পুজো দিতে এসে অনুব্রত এ কথা বললেও এ দিনই দলত্যাগী নেতা শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীদের পোস্টার দেখা গিয়েছে বোলপুরে।
এ দিন দুপুরে তারাপীঠে পুজো দিতে আসেন অনুব্রত। সঙ্গে ছিলেন দলের জেলা সহসভাপতি অভিজিত সিংহ, সিউড়ির বিধায়ক অশোক চট্টোপাধ্যায়, রামপুরহাট ২ ব্লকের সভাপতি সুকুমার মুখোপাধ্যায়, রামপুরহাট মহকুমার পর্যবেক্ষক ত্রিদিব ভট্টাচার্য। পুজো দেওয়ার আগেই অনুব্রত মণ্ডল, ‘‘নেতা গেলে বয়ে যাবে না, কর্মীরা গেলে বয়ে যাবে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘নেতা চলে গেলে কোনও ব্যাপার নয়। কর্মী থাকলেই হবে। কর্মীরা নেতা তৈরি করেন। কর্মীরা ঠিক আছে।’’
অনুব্রত কর্মীরা ঠিক আছেন বলে দাবি করলেও বুধবার অনুব্রতর খাসতালুকে বোলপুর পুরসভার এক বিদায়ী কাউন্সিলর ও তাঁর স্বামী দল ছাড়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন। তিন দিন আগে ময়ূরেশ্বর বিধানসভার তৃণমুল বিধায়ক তথা তৃণমূলের ময়ূরেশ্বর ১ ব্লক সভাপতি অভিজিৎ রায়ের কাজকর্মের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ পদ থেকে ইস্তফা দেন দীর্ঘদিনের তৃণমূল নেতা কাজল সাহা।
এমনকি নেতারা চলে গেলেও দলের কিছু এসে যাবে না বলে যে দিন দাবি করলেন অনুব্রত, ঠিক সেদিনই তাঁর নিজের শহর বোলপুরে পোস্টার পড়ল ‘দাদার অনুগামীদের’! সেই পোস্টারকে ঘিরে নতুন করে জল্পনা শুরু হয়েছে শহরে।
বিশেষ করে বুধবার বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পরে বৃহস্পতিবার তৃণমূলের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকেও যেখানেও ইস্তফা দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। বৃহস্পতিবার সকালে বোলপুর থানার রাইপুর বাসস্ট্যান্ড, নুরপুর, মিনি বাজার, কাশীপুর, এমনকি রাইপুর-সুপুর গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয়ের সামনেও শুভেন্দু অনুগামীদের পোস্টার পড়তে দেখা যায়! সেই সব পোস্টারে লেখা ছিল, ‘শুভেন্দু দা আমরা তোমার অনুগামী’।
কিন্তু, এই ‘অনুগামীরা কারা’, সে প্রশ্নের জবাব মেলেনি। সম্প্ররতি জেলা সদর সিউড়িতেও ‘দাদার অনুগামীদের’ পোস্টার পড়েছিল। রাইপুর-সুপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান নিখিল বাছার বলেন, ‘‘এখানে শুভেন্দুর অনুগামী বলে কেউ নেই। সকলেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অনুব্রত মণ্ডলেরই সৈনিক। সিপিএম এবং বিজেপির কিছু লোক এই সমস্ত কাজ করেছে।’’
যদিও বিজেপির জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল বলেন, “এর সঙ্গে বিজেপির কোনও সম্পর্ক নেই। এটা তৃণমূলের কোন্দলের ফল। আসলে শুভেন্দু অধিকারীর মতো নেতাকে অনেক মানুষই চান। তাঁরাই এই কাজ হয়তো করেছেন।”
অনুব্রত তারাপীঠে এ দিন বিধানসভা ভোটে তৃণমূল জয়ী হবে বলে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে দাবি করেন। তাঁর কথায়, ‘‘এর আগে মাতারার কাছে ২১০ আসন চেয়েছিলাম। মাতারার ২১১ আসন দিয়েছে। এ বারে মাতারার কাছে ২২০ আসন চেয়েছি। আমার ১০০ শতাংশ বিশ্বাস ২২০ আসন পাব।’’