ক্রিকেটের মাঠ, বিয়েও বার্তা দিল ‘নো এনআরসি’

নব দম্পতির এমন প্রতিবাদ দেখে আমন্ত্রিতদের অনেকই বলেছেন, উচিত পদক্ষেপ।  

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

মহম্মদবাজার ও সিউড়ি  শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:২০
Share:

খেলার মাঠে (বাঁ দিকে) এবং বিয়ের আসরে প্রতিবাদ। নিজস্ব চিত্র

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ), জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) এবং জাতীয় জনগণনা পঞ্জি (এনপিআর) নিয়ে উত্তপ্ত সারাদেশ। ব্যতিক্রম ছিল না এ রাজ্যও। প্রতিবাদের আঁচ ছড়িয়ে পড়েছে বিয়ে থেকে শুরু নানা অনুষ্ঠানে। জেলায় জেলায় ছোটখাটো খেলার প্রতিযোগিতাতেও নানা ভাবে হচ্ছে প্রতিবাদ।

Advertisement

তেমনই প্রতিবাদ হল মহম্মদবাজারের শাহনগর গ্রামের ক্রিকেট প্রতিযোগিতায়। শুক্রবার পাইনাল ম্যাচের সময় এনআরসি, এনপিআর এবং সিএএ-র বিরুদ্ধে বার্তা দিতে অতিথি-মঞ্চের চারদিকে লাগানো হয়েছিল পোস্টার ও ব্যানার। এ ছাড়াও ম্যাচ চলাকালীন মাঝেমাঝেই মাইকের মাধ্যমে প্রচার করা হয়, ‘আমরা এই আইন মানছি না। এত দিন যেভাবে সকলে এক সঙ্গে বসবাস করেছি, সেই ভাবেই আমরা একসঙ্গে থাকতে চাই।’ আয়োজকদের পক্ষে সাজ্জাত মণ্ডল বলেন, ‘‘আমরা ক্লাবের সকল সদস্য মিলে আলোচনা করেই এই পোস্টার লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যেহেতু এই খেলাকে কেন্দ্র করে এলাকার বহু মানুষ এক জায়গায় জমা হবেন, তাই সকলেই তা দেখতে পাবেন।’’ অতিথি-মঞ্চে উপস্থিত ব্লক তৃণমূলের যুব সভাপতি মহম্মদ খায়ের আলি বলেন, ‘‘আজ সারা দেশ সিএএ, এনআরসি, এনপিআরের বিরোধিতা করছে। শাহনগর জাগরণী সঙ্ঘের পক্ষ থেকেও পোস্টারের মাধ্যমে সেই প্রতিবাদ তুলে ধরা হয়েছে।’’

একই ভাবে সিএএ-এনআরসি’র বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হয়েছে সিউড়ির একটি বিয়ের আসরেও। জেলা সদরের পাশ দিয়ে যাওয়া জাতীয় সড়ক ঘেঁষা একটি অনুষ্ঠান ভবনে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিয়ের প্রীতিভোজের অনুষ্ঠান ছিল। সেখানেই নব দম্পতি অর্ক মুখোপাধ্যায় ও সুইটি চক্রবর্তীর হাতে দেখা গেল ‘নো এনপিআর নো এনআরসি নো সিএএ’ লেখা পোস্টার। নব দম্পতির এমন প্রতিবাদ দেখে আমন্ত্রিতদের অনেকই বলেছেন, উচিত পদক্ষেপ।

Advertisement

সিউড়ির বাসিন্দা, অস্থায়ী পঞ্চায়েত কর্মী তথা এসএফআইয়ের জেলা সভাপতি অর্ক। তিনি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। তাঁর নববিবাহিতা স্ত্রী সুইটি মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা এবং এমএ, বিএড। সুইটি চাকরি পাননি। বিয়ের আসরে এমন প্রতিবাদ কেন, তার জোরালো যুক্তি দিয়েছেন নবদম্পতি। দু’জনেই অভিযোগ করেছেন, যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে কেন্দ্রে ক্ষমতায় এসেছিল বিজেপি সরকার, তার একটাও পূরণ হয়নি। জিডিপি-র হার কমছে। অর্থনীতিও তলানিতে। বেকারত্ব এ যাবতকালের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। রেল, এলআইসি বেসরকারিকরণ হতে চলেছে। জিনিসপত্রের দাম বাড়েছে। অর্ক, সুইটি বলেন, ‘‘সে-সব দিকে নজর না দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার এনআরসি, সিএএ, এনপিআর নিয়ে মানুষকে ক্রমাগত বিব্রত করে চলেছ। বিয়ে একটা সামাজিক অনুষ্ঠান। এ ভাবে প্রতিবাদ করে সমাজকে একটা বার্তা দিতে চেয়েছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement