ঘটনাস্থলে বাঁকুড়ার সাংসদ সুভাষ সরকার। নিজস্ব চিত্র
রেলের জমিতে উচ্ছেদ অভিযানকে কেন্দ্র করে সোমবার উত্তেজনা ছড়াল বাঁকুড়া শহরের কবরডাঙা এলাকায়। এলাকাবাসীর একাংশের বিক্ষোভ শুরু করলে অভিযান বন্ধ রেখে ফিরে যেতে বাধ্য হন রেলকর্মীরা। এই ঘটনার জেরে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে।
ঘটনার কথা শুনে কবরডাঙায় গিয়েছিলেন স্থানীয় বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকার। পুনর্বাসনের দাবিতে তাঁকে ঘিরে ধরে স্থানীয় বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখান বলে খবর। যদিও সুভাষবাবুর বক্তব্য, ‘‘স্থানীয় লোকজন কেউ বিক্ষোভ দেখাননি। রাজনৈতিক চক্রান্ত করে বেপাড়ার লোকজনকে এনে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছিল। জমিতে জবরদখল মুক্ত অভিযান বন্ধ রাখার জন্য আগেই রেলকে চিঠি দিয়েছিলাম।’’ সাংসদের অভিযোগ, ‘‘সিপিএম ও তৃণমূল সরকারের ব্যর্থতার জন্যই এই রাজ্যে বহু মানুষের বাড়ি নেই। তাই তাঁদের রেলের জমিতে থাকতে হচ্ছে।”
বাঁকুড়া শহরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত কবরডাঙায় রেললাইন সংলগ্ন বেশ কিছুটা জমিতে বহু বছর ধরে বাস করছেন অনেকগুলি পরিবার। জমি ছেড়ে দেওয়ার জন্য গত দু’দিন ধরে এলাকায় মাইক-প্রচার চালাচ্ছিল রেল। সোমবার জবর দখল হটানো হবে বলে আগাম ঘোষণা করা হয়েছিল। সেই মোতাবেক এ দিন সকালে আরপিএফ ও রেলকর্মীরা ওই এলাকায় যেতেই স্থানীয় মানুষজন বিক্ষোভ শুরু করেন। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। রেলের কর্মীরা কাজ বন্ধ রেখে ফিরে যান। ডিআরএম (আদ্রা) নবীন কুমারের প্রতিক্রিয়া, “রেলের জমি দখল করে রাখা বেআইনি। এ দিন কাজ না হলেও জমি দখল মুক্ত করা হবে।”
বিক্ষোভের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর অনন্যা চক্রবর্তী এবং সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য কিঙ্কর পোশাক এবং দলের জেলা কমিটির সদস্য প্রতীপ মুখোপাধ্যায়। আসেন এসইউসি’র জেলা কমিটির সদস্য লক্ষ্মী সরকার। অনন্যাদেবী এবং প্রতীপবাবু এক সুরে বলেন, “লকডাউন-এর মাঝে এ ভাবে জবরদখল মুক্ত করার নামে দুঃস্থ মানুষদের সমস্যায় ফেলতে চাইছে রেল।’’ তাঁদের স্পষ্ট কথা, ‘‘পুনর্বাসন না দিয়ে রেলের জমিতে বসবাসকারীদের কোনও ভাবেই হটানো যাবে না।”
প্রতীপবাবু বলেন, “বাসুদেব আচারিয়া বাঁকুড়ার সাংসদ থাকাকালীন জেলায় রেলের জমি থেকে যাঁদের উচ্ছেদ করা হয়েছিল, তাঁদের সকলকেই পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছিল। এ ক্ষেত্রেও পুনর্বাসন দিতে হবে।”