একঘরে করার অভিযোগ
Tribal family

Social isolation: ফতোয়া তুলুন, মোড়লকে বলল জেলা প্রশাসন

অভিযোগকারী পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি সমস্যা সুরাহার আশ্বাস দেন আধিকারিকেরা।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০২১ ০৫:৪২
Share:

একঘরে হওয়া ওই পরিবারের সদস্যরা। বোলপুর। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।

শান্তিনিকেতনের গ্রামে মোড়লের নিদানে একটি আদিবাসী পরিবারকে একঘরে করে দেওয়ার অভিযোগের কথা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ পেতেই নড়েচড়ে বসল জেলা পুলিশ-প্রশাসন। এ দিন প্রশাসন ও শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ আধিকারিকেরা শনিবার রূপপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বালিপাড়া এগ্রামে যান। অভিযোগকারী পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি সমস্যা সুরাহার আশ্বাস দেন আধিকারিকেরা। জেলা পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী বলেন, “পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে । আইন মোতাবেক যা ব্যবস্থা নেওয়ার, তা নেওয়া হবে।”

Advertisement

ঘটনার সূত্রপাত ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে। অভিযোগকারিণী কালিদাসী চোড়ে (মারান্ডি)ও তাঁর স্বামী ছোটন মারান্ডি জানান, গ্রামের একটি ক্লাবের চাবি তাঁদের কাছে থাকত। ওই চাবি নিয়ে গ্রামেরই সুকোল হেমব্রমের সঙ্গে তাঁদের বিবাদ হয়। অভিযোগ, সুকোল কালিদাসীকে মারধর করেন। সেই অভিযোগ নিয়ে কালিদাসী ও ছোটন গ্রামের মোড়লের দ্বারস্থ হন। কিন্তু মোড়ল কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায়, তাঁরা পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান। ছোটনের অভিযোগ, ‘‘পুলিশের অভিযোগ তোলার জন্য মোড়ল ও সুকোল আমাদের উপরে চাপ সৃষ্টি করে। তার পরেও অভিযোগ না তোলায় মোড়ল আর সুকোল গ্রামের পঞ্চজনের উপস্থিতিতে এক ঘরে করার নিদান দেন৷ সেই থেকে গ্রামে একঘরে হয়েই রয়েছি আমরা।’’

কালীদাসীরা এ দিন দাবি করেন, গ্রামের যে কোনও অনুষ্ঠানে যেন তাঁদের না ডাকা এবং কেউ তাঁদের সঙ্গে কথা বললে আর্থিক জরিমানার ফতোয়াও দেওয়া হয়। তার পর থেকে ওই পরিবারের সদস্যেরা একঘরে হয়েই রয়েছেন। দুই সপ্তাহ আগে তাঁরা সিউড়িতে জেলা পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হন।

Advertisement

শনিবার ওই পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান শান্তিনিকেতন থানার ওসি দেবাশিস পণ্ডিত, রূপপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান রনেন্দ্রনাথ সরকার-সহ প্রশাসনের একটি প্রতিনিধিদল। গ্রামে এ দিন মোড়লের দেখা না মেলায় তাঁকে করে বয়কটের তুলে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় প্রশাসনের তরফে। কালিদাসী বলেন, ‘এই দেড় বছরেরও বেশি সময় আমাদের চরম সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়েছে। আমরাও চাই আর পাঁচজনের মতো সমাজে স্বাভাবিক ভাবে বসবাস করতে।’’

গ্রামের মোড়ল সুনীল হাঁসদার অবশ্য দাবি, “ওই পরিবারের অভিযোগ ভিত্তিহীন। আদিবাসী সমাজে থাকতে গেলে তাদের কেউ কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে, সেগুলিই তাদের বলা হয়েছিল।” আজ, রবিবার ওই পরিবার ও গ্রামের মোড়লকে সঙ্গে নিয়ে প্রশাসনের বৈঠক হওয়ারও কথা রয়েছে। ঘটনার কথা জেনে বীরভূম জেলা আদিবাসী গাঁওতার সম্পাদক রবীন সরেন বলেন, “দু’পক্ষের সঙ্গে কথা বলে এই সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করা হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement