সেই জমি। নিজস্ব চিত্র।
বীরভূমে জমি দখলের অভিযোগ নতুন নয়। এ বার ইলামবাজার ব্লকে বাউলশিল্পী পূর্ণদাস বাউলের জমি জবরদখল করে নেওয়ার অভিযোগ উঠল জমি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে। নিজের ‘বেদখল’ হওয়া জমি শুক্রবার সরেজমিনে দেখতে আসেন পূর্ণদাস বাউল। খবর পেয়ে সেখানে যান ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিকের প্রতিনিধি এবং স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসনের কয়েক জন কর্মী।
বোলপুর-শান্তিনিকেতনে জমি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্যে অনেক প্রকৃত জমির মালিক নিজেদের জমি হারাতে বসেছেন বলে অভিযোগ। কিছুদিন আগেও এমনই ঘটনা ঘটে বোলপুরের সুরুল, তালতোর এলাকায়। ওই এলাকায় কয়েকশো প্রকৃত মালিকের জমি অসাধু উপায়ে জমি মাফিয়ারা রাতারাতি হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ এ বার পূর্ণদাস বাউলের জমিও বেদখল হওয়ার অভিযোগ পেয়ে নড়েচড়ে বসেছে বীরভূম জেলা প্রশাসন। আজ থেকে বেশ কয়েক বছর আগে ইলামবাজার থানার কামারপাড়া মৌজায় রাস্তার ধারে চার বিঘা জমি কেনেন পূর্ণদাস। কিন্তু, ২০০৬ সালের পর থেকে সেই জমি অল্প অল্প করে জবরদখল হতে শুরু করে বলে অভিযোগ। এই মর্মে শিল্পীর পরিবার জেলা প্রশাসন এবং ভূমি সংস্কার আধিকারিকের কাছে বেশ কয়েক বার অভিযোগ করেছেন। কিন্তু, তাতে ফল মেলেনি বলেই বাউল শিল্পীর দাবি। তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘জমি মাফিয়ারা ভুয়ো কাগজ বানিয়ে জমি বিক্রি করে দিতে শুরু করেছে। এমনকি জমির নানা অংশে দোকানঘর থেকে শুরু করে স্থায়ী নির্মাণও হচ্ছে।’’
জমি ফিরে পেতে জেলাশাসক থেকে শুরু করে ভূমি দফতরেলিখিত অভিযোগ করেছেন পূর্ণদাসের ছেলে দিব্যেন্দু দাস বাউল। এ দিন আক্ষেপের সুরে পূর্ণদাস বলেন, ‘‘এই জমি আমার। জমি তিন ছেলের নামে লিখে দিয়েছি। কিন্তু, সমস্ত জমি আজ জবরদখল হয়ে যাচ্ছে। কারা দখল করে নিচ্ছে, তা বলতে পারব না। তবে যেখানে আখড়া তৈরির জন্য মানুষ বাউলদের জমি দেয়, সেখানে বাউলের জায়গাই দখল হয়ে যাওয়ায় খারাপ লাগছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আমি কোনও দিন শুনিনি, কোথাও বাউলের জায়গা দখল করে নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীকেও জানাব।”
ইলামবাজার ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক নির্মল কুমার হালদার বলেন, “বিষয়টি তদন্ত করে প্রশাসনের তরফে যা ব্যবস্থা
নেওয়ার, তা নেওয়া হবে।” জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, ‘‘আমার কাছে এখনও পর্যন্ত এই ধরনের কোনো অভিযোগ এসে পৌঁছায়নি। সত্যিই যদি এমন ঘটনা ঘটে থাকে, তাহলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’