প্রতিবাদ: বিশ্বভারতীতে গবেষকেরা। নিজস্ব চিত্র।
বিশ্বভারতীতে এমফিল এবং পিএইচডি-র পরীক্ষা ও মার্কশিট বাবদ ফি অস্বাভাবিক বাড়ানো হয়েছে অভিযোগ তুলে প্রতিবাদ বিক্ষোভে শামিল হলেন বিশ্বভারতীর গবেষক সংগঠন ‘বিশ্বভারতী ডেমোক্রেটিক রিসার্চ স্কলারস অর্গানাইজেশন’-এর সদস্যেরা। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন গবেষকরা। এ দিনই সকাল থেকে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের রাস্তা চলাচলের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়, যার ফলে সমস্যায় পড়েন স্থানীয়েরাও। তবে, রাস্তা বন্ধ করা গবেষকদের বিক্ষোভের কথা মাথায় রেখেই কি না, তা জানা যায়নি।
গত ২৯ জুন একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিশ্বভারতী জানায়, আগামী ৮ জুলাইয়ের মধ্যে এমফিল প্রথম ও তৃতীয় সিমেস্টার এবং পিএইচডি কোর্সওয়ার্কের গবেষকদের পরীক্ষা ও মার্কশিট বাবদ ১৪০০ টাকা জমা দিতে হবে। দু’দিন আগে এই ফি-বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল এসএফআই। যদিও পরবর্তীতে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ পিএইচডি-র ক্ষেত্রে ৩০০ টাকা কমিয়ে (১১০০) ঘোষণা করেন, ২০১৭ থেকে ২০১৯ সালের ফি কাঠামোকেই অপরিবর্তিত রাখা হল।
যদিও গবেষকদের দাবি, কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ‘ধোঁয়াশায়’ ভরা। ফি বিষয়ে একাধিক প্রশ্নও তুলে ধরেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, পিএইচডি-তে ভর্তি হওয়ার সময় প্রত্যেক গবেষক বিগত বছরগুলিতে ‘কোর্স ফি’ বাবদ বরাদ্দ টাকা জমা করে থাকেন। তা হলে ভর্তি হওয়ার পরে পরীক্ষার সময় কোন কারণে ফের ১১০০ টাকা জমা করতে বলা হচ্ছে, তার কোনও সদুত্তর নেই। গবেষকদের আরও অভিযোগ, পুরনো ফি কাঠামো অনুযায়ী এমফিল-এর বাৎসরিক ফি ১৪০০ টাকা। কিন্তু, কর্তৃপক্ষ ফি অপরিবর্তিত রাখার কথা বললেও, আসলে সেই বাৎসরিক ফি-কে সিমেস্টার ফি-তে রূপান্তরিত করে আলাদা ভাবে টাকা আদায়ের চেষ্টা করা হচ্ছে। এ দিন বিক্ষোভকারীরা প্রশ্ন তোলেন, মার্কশিট ফি বাবদ বিশ্বভারতী বেশ কিছু বছর ধরে ৫০ টাকা করে নিত। এ বছর হঠাৎ করে গবেষকদের কাছে মার্কশিট ফি ৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করা হল কেন?
এর পাশাপাশি সময়ে নননেট স্কলারশিপ না পাওয়া, পড়ুয়া-কর্মী ও অধ্যাপকদের যখন তখন সাসপেন্ড করার অভিযোগও তোলা হয় এ দিনের বিক্ষোভে। পাশাপাশি গবেষকেরা জানান, তাঁরা উপাচার্যের সঙ্গে গোটা বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চাইলেও কর্তৃপক্ষের তরফে সেই প্রস্তাবের কোনও সদুত্তর মেলেনি। দাবি মানা না হলে ভবিষ্যতে লাগাতার আন্দোলনেরও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সংগঠনের প্রতিনিধিরা। বিশ্বভারতীর এক আধিকারিক এ দিন আবার দাবি করেন, ফি কাঠামোয়নও বদল আনা হয়নি। ২০১৭, ২০১৮ এবং ’১৯-এর সঙ্গে ২০২১-এর ফি একই আছে।