শান্তিনিকেতন থানায় বিক্ষোভ। শনিবার। নিজস্ব চিত্র।
শান্তিনিকেতনের পারুলডাঙ্গায় তিন বছরের শিশুকন্যার দেহ উদ্ধারের পরে সাত দিন পেরিয়ে গিয়েছে। ওই ঘটনার তদন্তে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে শনিবার শান্তিনিকেতন থানা ঘেরাও করলেন পারুলডাঙ্গার আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজন।
দিন দশেক আগে পারুলডাঙ্গা আদিবাসীপাড়ার ওই শিশুকন্যা বাড়ির সামনে থেকে নিখোঁজ হয়ে যায়। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান মেলেনি। গত শনিবার বিকালে ওই শিশুটির মৃতদেহ তার বাড়ি থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে একটি পুকুরের পাড় থেকে উদ্ধার হয়। তার পরেই উত্তেজনা ছাড়ায়। শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ দেহ উদ্ধার করতে গেল তাদের বাধা দেয়া হয়। পুলিশ কুকুর নিয়ে এসে ঘটনার তদন্তের দাবিতে দীর্ঘক্ষণ দেহ আগলে রাখেন গ্রামবাসীরা। ওই রাতেই পুলিশ কুকুর নিয়ে এসে তদন্ত চালান পুলিশ আধিকারিকেরা।
পুলিশ সাত দিনের মাথায় দোষী ব্যক্তিকে গ্রেফতারের আশ্বাস দিলে গ্রামবাসীরা বিক্ষোভ তুলে নেন। থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই শিশুর বাবা-মা। তবে, কী ভাবে তার মৃত্যু হল, এটা খুন না অন্য কিছু—কিছুই এখনও জানা যায়নি। পুলিশের দাবি, শিশুকন্যার দেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখান থেকে এখনও রিপোর্ট আসেনি।
এত দিন পরেও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি অভিযোগে এ দিন শান্তিনিকেতন থানা ঘেরাও করেন গ্রামবাসীরা। থানার পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলার পরে বেরিয়ে ফের পুলিশের ভূমিকা নিয়ে মৃতের পরিবার ও প্রতিবেশীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। মৃতের বাবা বলেন, “পুলিশ আমাদের আশ্বস্ত করেছিল এই বলে যে, দোষী ব্যক্তিকে দ্রুত গ্রেফতার করবে। কিন্তু আমরা এখনও পর্যন্ত জানি না যে দোষী আদৌ ধরা পড়েছে কি না। পুলিশের তদন্তে আমরা একেবারেই খুশি নয়।” গ্রামবাসী সুমি মূর্মু, শিবদাস হেমব্রমরা বলেন, “যে যাওয়ার, সে চলে গিয়েছে। কিন্তু, এ ভাবে যদি চলতে থাকে তাহলে আমরা ছেলেমেয়ে নিয়ে গ্রামে কী ভাবে বাস করব। আমরা চাই এই ঘটনার সত্য উদঘাটন করার পাশাপাশি পুলিশ দোষীকে ধরে শাস্তির ব্যবস্থা করুক।’’
পুলিশের দাবি, ওই ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে এ দিন পারুলডাঙ্গা থেকেই এক নাবালককে ধরা হয়েছে। তাকে সিউড়ি জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে তোলা হলে বিচারক পাঁচ দিনের জন্য হোমে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এই ঘটনায় আরও কেউ জড়িত রয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ ।