অবসরপ্রাপ্তদের বিক্ষোভ। সিউড়ি পুরসভার সামনে। নিজস্ব চিত্র।
অবসরের পরে ১০ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু অভিযোগ, এখনও সিউড়ির পুরসভার ৫১ জন কর্মী গ্র্যাচুইটির অর্থ পাননি। তাঁদের দাবি, সব মিলিয়ে বকেয়ার পরিমাণ প্রায় ৩ কোটি টাকা। বার বার পুরসভাকে জানিয়েও ফল মেলেনি বলে দাবি। তাই মঙ্গলবার পুরসভার সামনে বিক্ষোভ দেখালেন এ ধরনের কর্মীদের সংগঠন ‘অবসরপ্রাপ্ত পুর কর্মচারী ঐক্য মঞ্চ’। তাঁদের হুঁশিয়ার, এ বিক্ষোভে কাজ না-হলে তাঁরা মহকুমাশাসক ও জেলাশাসকের কাছে সমস্যার কথা জানাবেন। তার পরেও কাজ না হলে আদালতে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তাঁরা। সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন পুর-কর্তৃপক্ষ। চলতি অর্থবর্ষের মধ্যেই তাঁদের প্রাপ্য টাকা মিটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হবে বলেও জানান কর্তৃপক্ষ।
অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীদের অভিযোগ, কোটি কোটি টাকা খরচ করে সিউড়ি উৎসব আয়োজন করা হচ্ছে, কিন্তু কর্মীদের প্রাপ্য অর্থের দিকে কেউ ফিরেও তাকাচ্ছেন না। ঐক্য মঞ্চের তরফে অসীম মুখোপাধ্যায় বলেন, “অবসরের পরে আমার গ্র্যাচুইটি বাবদ এককালীন ৭ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা পাওয়ার কথা। কিন্তু একটি টাকাও দেওয়া হয়নি। একাধিক বার আবেদন জানিয়েছি। প্রতি বারই বলা হয়, কয়েক মাসের মধ্যে দেওয়া হবে। বিভিন্ন সরকারি দফতরের বকেয়া করের টাকা না-পাওয়ার জন্য টাকা দেওয়া যাচ্ছে না, এমন তথ্যও দেওয়া হয়। কিন্তু সেই টাকা আদায়ের দায়িত্ব তো আমাদের নয়। দ্রুত প্রাপ্য টাকা না-পেলে আমরা পুরসভা অচল করে দেব।”
সিউড়ির তৃণমূলপন্থী ‘পুর কর্মচারী ফেডারেশনের’ সাধারণ সম্পাদক আশিস দে বলেন, “অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের দাবির সঙ্গে আমরা সহমত। ফিনান্স অফিসার এবং এগ্জ়িকিউটিভ অফিসারের অপদার্থতার কারণে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আমরা সংগঠনগত ভাবে পুরপ্রধানের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করব।” অন্য দিকে, অসীমের হুঁশিয়ারি, ‘‘ভাটপাড়া ও বহরমপুর পুরসভাতেও এমন পরিস্থিতি হয়েছিল। সেখানে কর্মীরা হাই কোর্টে গেলে আদালত ফিনান্স অফিসার, এগ্জিকিউটিভ অফিসার ও পুর প্রতিনিধিদের প্রাপ্য টাকাও বন্ধ করে দেন। সিউড়িতে এমন পরিস্থিতি হোক তা আমরা চাই না৷ তবে প্রয়োজনে আমরাও হাই কোর্টে যাব।’’
পুরপ্রধান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ওঁদের দাবি ন্যায্য। এই টাকার ৬০ শতাংশ আমাদের নিজস্ব তহবিল থেকে এবং ৪০ শতাংশ সরকারি তহবিল থেকে দেওয়ার কথা। কিন্তু বিভিন্ন সরকারি দফতর আমাদের কয়েক কোটি টাকা কর বকেয়া রেখেছে। মার্চের মধ্যেই আমরা কিছুটা পরিমাণ হলেও টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করব।” পুরপ্রধানের সংযোজন, “সিউড়ি উৎসব নিয়ে যে অভিযোগ উঠছে, তা ঠিক নয়। বিজ্ঞাপন ও শুভানুধ্যায়ীদের সহযোগিতায় এই উৎসব আয়োজিত হয়। পুরসভার তহবিলে হাত দেওয়া হয়নি।”