কোচবিহারের ছুরি মেরে দুই যুবককে খুন! —প্রতীকী চিত্র।
জোড়া খুন কোচবিহারের দিনহাটায়। মঙ্গলবার রাত ১০টা নাগাদ দিনহাটা ১ ব্লকের ভেটাগুড়ি বালাডাঙায় দুই ব্যক্তিকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করেন স্থানীয়েরা। দু’জনকেই ছুরি মারা হয়েছিল। স্থানীয়েরা তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানিয়েছে, দু’জনের মধ্যে পুরনো দ্বন্দ্ব ছিল। তা নিয়ে বচসার সময় ওই ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশের একাংশের অনুমান। যদিও পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনাস্থল থেকে ছুরি বা অন্য কোনও ধারালো অস্ত্র উদ্ধার হয়নি। ফলে অনেকের অনুমান, খুনের ঘটনায় তৃতীয় কোনও ব্যক্তির যোগ থাকলেও থাকতে পারে।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম ইউসুফ মিয়া (৫৮) এবং হাসানুর মিয়া (৩৫)। ইউসুফের বাড়ি আটিয়াবাড়ি প্রথম খণ্ড এলাকায়। আর হাসানুরের বাড়ি ভেটাগুড়ির বালাডাঙায়। কোচবিহারের পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, ১২ বছর আগে মাথাভাঙায় একটি সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছিলেন ইউসুফ এবং হাসানুর। সেই সময় দু’জনেরই জেল হেফাজত হয়েছিল। কিছু দিন পরে হাসানুর জামিনে ছাড়া পেয়ে গিয়েছিলেন। জেলমুক্তির পরে ইউসুফের স্ত্রীকে নিয়ে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন তিনি। কিন্তু ইউসুফের স্ত্রী তাতে রাজি হননি। পুলিশ জানতে পেরেছে, ইউসুফের স্ত্রী রাজি না হওয়ায় তাঁকে সেই সময় হেনস্থা করেছিলেন হাসানুর। এর পর অন্য একটি মামলায় ফের তিনি গ্রেফতার হন। পাঁচ বছর জেল হেফাজতেও ছিলেন। সেই জেলেও ইউসুফ এবং হাসানুরের মধ্যে শত্রুতা তৈরি হয়েছিল। মাস পাঁচেক আগে দু’জনেই ছাড়া পেয়েছেন। তার পরেই খুন হলেন দু’জনে।
পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে দেখা গিয়েছে, মত্ত অবস্থায় বচসা হয়েছিল। সেই সময়েই হামলা হয়। প্রচুর রক্ত ঝরেই মৃত্যু বলে মনে করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তে বিষয়টি স্পষ্ট হবে। তবে এখনও কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।’’
হাসানুরের স্ত্রী সায়রা বিবির দাবি, ‘‘স্থানীয় বাসিন্দারা বাড়িতে এসে খবর দেয় যে, আমার স্বামী রক্তাক্ত অবস্থায় দোকানের পাশে পড়ে রয়েছে। এর পরেই আমি যাই। একটা পুরনো মামলা নিয়ে অনেক দিন ধরেই আমার স্বামীকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। হয়তো সেই কারণেই আমার স্বামীকে খুন হতে হল।’’