জখমের চিকিৎসা। নিজস্ব চিত্র
রাজ্যের তিনটি বিধানসভা উপনির্বাচনে জয়ের পরে, বৃহস্পতিবার রাতে গ্রামে তৃণমূলের বিজয় মিছিল বেরিয়েছিল। শুক্রবার সকালে সে গ্রামেই বিজেপি ও তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের অভিযোগ উঠল। তাতে আহত হলেন দু’পক্ষের কয়েকজন। বাঁকুড়ার সোনামুখীর কাষ্ঠসাঙ্গা গ্রামের ঘটনা।
বিজেপির স্থানীয় নেতৃত্বের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তৃণমূল কর্মীরা এলাকায় বিজয় মিছিলের নামে বোমা ফাটিয়ে, বিজেপি কর্মীদের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে হুমকি দিয়ে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করেন। শুক্রবার সকালে বিজেপির সমর্থক এক আনাজ বিক্রেতা বাড়ি বাড়ি ঘুরে বিক্রি করতে বেরোলে তাঁর উপরে টাঙ্গি, রড, লাঠি প্রভৃতি নিয়ে কয়েকজন তৃণমূল কর্মী হামলা চালান বলে অভিযোগ।
গুরুতর আহত আনাজ বিক্রেতা বাউল খাওয়াসের অভিযোগ, ‘‘ভোরবেলায় পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে আনাজ বিক্রি করছিলাম। ফেরার পথে কাষ্ঠসাঙ্গা চৌমাথায় ২০-২৫ জন লাঠি ও টাঙ্গি নিয়ে তেড়ে আসে। কিছু বলার আগেই ওরা ডান হাতের কনুইয়ের নীচে টাঙ্গির কোপ মারে। পরে বিজেপির লোকজন খবর পেয়ে আমাকে সোনামুখী গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়।’’ বিজেপির সোনামুখী গ্রামীণ মণ্ডল ১ এর সভাপতি মন্টু ঘোষের অভিযোগ, ‘‘ওই আনাজ বিক্রেতাকে বাঁচাতে গিয়েছিলেন আমাদের এক দলীয় কর্মী কার্তিক বীর। তাঁকেও তৃণমূলের ছেলেরা মারধর করে। এক বধূকেও নিগ্রহ করে। সবাইকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়েছে।’’ পরে কার্তিক বীর সোনামুখী থানায় তাঁদের উপরে হামলার জন্য এলাকার আট তৃণমূল কর্মীর নামে অভিযোগ দায়ের করেন।
হামলা করা বা হুমকি দেওয়ার অভিযোগ মানেননি তৃণমূলের যুব ব্লক সভাপতি বিশ্বনাথ মুখোপাধ্যায়। তাঁর পাল্টা দাবি, বিজেপি কর্মীরাই মানিকবাজার অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি কার্তিক গড়াই ও তাঁর ছেলে যুব তৃণমূল কর্মী অজয় গড়াইয়ের উপরে হামলা চালান। বিশ্বনাথবাবুর অভিযোগ, ‘‘পরিকল্পিত ভাবে বিজেপি আমাদের নেতা-কর্মীদের উপরে হামলা করেছে। আহতদের সোনামুখী হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।’’ ওই গ্রামে বিজয় মিছিল হলেও বোমাবাজি বা হুমকি দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূলের বিষ্ণুপুর জেলা সাংগঠনিক সভাপতি তথা রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী শ্যামল সাঁতরাও। তাঁর দাবি, ‘‘উপনির্বাচনের জয়ের আনন্দে তৃণমূল কর্মীরা এলাকায় মিষ্টি বিতরণ করেন। বোমাবাজি করেনি। বরং বিজেপির লোকেরাই আমাদের কর্মীদের মারধর করে, অশান্তির পরিবেশ তৈরি করছে।’’