অর্থনীতিবিদ। নিজস্ব চিত্র
মার্কিন ভাষাতাত্ত্বিক নোম চমক্সির পরে এ বারে ‘ভার্চুয়াল’ মাধ্যমে বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও পড়ুয়াদের সঙ্গে আলোচনায় যোগ দিলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। অতিমারি পরিস্থিতি থেকে অর্থনীতি বা সামাজিক সঙ্কট, নানা প্রশ্নের জবাব দিলেন নোবেলজয়ী। ব্যক্ত করেন নিজের মতামতও।
বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ইন্টারফেস’-এর উদ্যোগে শনিবার ওই আলোচনার আয়োজন করা হয়। ‘ইন্টারফেস’-এর তরফে সুখেন্দু দাস, নিরুপম হাজরা ও কৌশিক ঘোষেরা জানান, বর্তমানে ভারতে থাকা অভিজিৎ এ দিন প্রায় ৩৫ মিনিট আলোচনায় যোগ দেন। অনলাইনে জুড়েছিলেন দেশের নানা প্রান্তের বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও পড়ুয়া-সহ প্রায় ১৩২ জন।
বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, আলোচনায় অতিমারি পরবর্তী পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রগুলির বর্তমান অবস্থান, পুঁজিবাদী কাঠামোর ভবিষ্যৎ, আধুনিক রাষ্ট্রে বয়স্কদের একাকিত্ব ও তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব নিয়ে নোবেলজয়ীর কাছে প্রশ্ন উঠে আসে। বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দেবনারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “অভিজিৎ জানান, অতিমারি পরিস্থিতিতে রাষ্ট্র ও সমাজের কাছে নানা চ্যালেঞ্জ উঠে আসে। অনেকাংশেই তা সামাল দিতে পদক্ষেপ করেছিল রাষ্ট্রগুলি। অতিমারির পরেও নানা সমস্যা উঠে আসছে। এখন সে সবের সঙ্গে যুঝতে হচ্ছে রাষ্ট্রগুলিকে।”
তাঁর সংযোজন, “পুঁজিবাদের ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে অভিজিৎ রাষ্ট্রভিত্তিক পুঁজিবাদের বৈচিত্রের প্রসঙ্গ টানেন। চিন ও সুইৎজ়ারল্যান্ডের পুঁজিবাদ যে এক নয়, বলেন তিনি। বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের একাকিত্ব ও মানসিক সমস্যা রুখতে রাষ্ট্রের নির্দিষ্ট নীতি তৈরির পক্ষেও মত দেন তিনি।” উপাচার্য আরও জানান, পুজোর ছুটি কাটিয়ে শীঘ্রই বিশ্ববিদ্যালয় চালু হতে চলেছে। তার আগে নোবেলজয়ীর সান্নিধ্য পাওয়া শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে পড়ুয়া সকলেরই বড় প্রাপ্তি।
বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র আমিমন ইসলাম বলেন, “এর আগে টিভিতে নানা অনুষ্ঠানে ওঁকে (অভিজিৎ) দেখেছি। পত্রপত্রিকায় অনেক কিছু পড়েছি। তবে এ দিন সরাসরি ওঁকে দেখার অভিজ্ঞতা বা ওঁর কথা শোনার সঙ্গে কোনও কিছুর তুলনা চলে না।” বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের গবেষক মিলন মণ্ডলও জানান, নোবেলজয়ী এ ভাবে সরাসরি বার্তালাপে জুড়বেন, ভাবতে পারেননি। অসাধারণ অভিজ্ঞতা। তবে আলোচনায় জুড়লেও অভিজিৎকে সরাসরি প্রশ্ন না-করতে পারার আক্ষেপ রয়ে গেল, জানান উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্বের গবেষক তানিয়া বসু মজুমদারের।