নকল: পাওয়া গিয়েছে এমন জাল একশো টাকার নোট। নিজস্ব চিত্র
শান্তিনিকিতেনের শ্যামবাটি ক্যানালের ঠিক আগে জমজমাট বাজার। সেখানে একটি ফোটোকপির দোকানকে ঘিরে বুধবার সন্ধ্যায় হইচই বেধে যায় এলাকায়। খবর ছড়িয়ে পড়ে, দোকানে হানা দিয়েছে সিআইডি, জাল নোট ছাপানোর অভিযোগে! পরে জানা গেল, সিআইডির উপস্থিতি আঁচ করতে পেরে চম্পট দিয়েছেন অভিযুক্ত দোকান মালিক প্রদীপ খান। বুধবার রাতে তাঁর বাড়িতেও তল্লাশি চালানো হয়। বৃহস্পতিবার বীরভূমের পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী বলেন, “পুরো বিষয়টি সিআইডি খতিয়ে দেখছে। তারাই সবটা বলতে পারবে।”
সিআইডি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, ফোটোকপির দোকানের আড়ালে চলছিল জাল নোট ছাপানোর কারবার। গোপন সূত্রে সেই খবর পেয়ে দোকানটিতে হানা দিয়ে একাধিক জালনোট, ফোটোকপি মেশিন, বেশ কিছু কাগজপত্র বাজেয়াপ্ত করে সিআইডি। এই ঘটনা সামনে আসতেই অবাক এলাকার বাসিন্দা থেকে শুরু করে ব্যবসায়ীরা। আশপাশে প্রচুর দোকানপাট, অনেকগুলি হোটেল ও রিসর্ট। বছরভর পর্যটকদের আনাগোনা। এমন এক এলাকায় কী ভাবে জাল নোটের কারবার চলছিল, তা ভেবেই পাচ্ছেন না স্থানীয়েরা।
এলাকা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রদীপের বাড়ি শান্তিনিকেতনের সুভাষপল্লিতে। বেশ কয়েক বছর ধরে শ্যামবাটি বাজারে তিনি লটারির টিকিট বিক্রি করে আসছেন। ওই দোকানেই সম্প্রতি লটারির পাশাপাশি একটি কালার মেশিন বসিয়ে নিয়ে ফোটোকপির ব্যবসা শুরু করেন প্রদীপ। সিআইডি-র দাবি, তাদেরহানা দেওয়ার খবর কোনও ভাবে আঁচ করতে পেরেই প্রদীপ পালিয়ে যান। স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যাচ্ছে, সিআইডির অফিসারেরা নিজেদের পরিচয় দিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন এবং প্রদীপের দোকানে তল্লাশি চালান। প্রত্যক্ষদর্শী ব্যবসায়ী অরুণ মাহাতো বলেন, ‘‘সিআইডির আধিকারিকেরা আমাদের বলেন, পাশে জাল টাকা ছাপা হচ্ছে, আপনারা কিছু জানেন না! এই কথা শুনে আমরাও অবাক হয়ে যাই। কিন্তু, যখন দোকান তল্লাশি করা হয় তখন দেখা গেল, সত্যি জাল নোটের হদিস মিলছে। এই ঘটনায় আমরা আতঙ্কিত।’’
সিআইডি-র এক কর্তা জানান, ওই দোকান থেকে ১০০ টাকার কয়েকটি জাল নোটের পাশাপাশি নানা সামগ্রী উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযুক্ত প্রদীপ খান সবে এই কাজ শুরু করেছিলেন। কোনও জালনোট চক্রের সঙ্গে তাঁর যোগ আছে কি না, তা তদন্ত করে দেখেছে সিআইডি।